চোখে সার্জারির সময় বারবার নড়াচড়া করছিলেন বয়স্ক রোগী। চিকিৎসক নিষেধ করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার কথা বুঝতে পারেননি ৮২ বছরের বৃদ্ধা। ফলে, নড়াচড়া করতেই থাকেন তিনি। একপর্যায়ে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় চিকিৎসকের এবং রোগীর মাথায় একের পর এক ঘুসি মারতে থাকেন তিনি। এ ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
বিবিসির খবরে জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছিল চীনে ২০১৯ সালে। তবে এ সপ্তাহে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি আলোচনায় আসে।
এরই মধ্যে অভিযুক্ত চিকিৎসককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। এমনকি, যে হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছিল, তার প্রধান নির্বাহীকেও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। হাসপাতালটির মালিক এয়ার চায়না গ্রুপ।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এক রোগীর চোখে অস্ত্রোপচার করছেন সার্জন। হঠাৎ রোগীর মাথায় অন্তত তিনবার ঘুসি মারেন তিনি।
এয়ার চায়না জানিয়েছে, চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর গুইগাংয়ের একটি হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছিল।
বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, সেদিন রোগী ছিলেন ৮২ বছর বয়সী এক নারী। অস্ত্রোপচারের আগে তাকে অ্যানেস্থেশিয়া দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এটি দেওয়ার পর থেকেই অস্থির হয়ে ওঠেন বৃদ্ধা। তিনি বেশ কয়েকবার মাথা ও চোখের মনি নড়াচড়া করেন।
এসময় সেই রোগীকে ম্যান্ডারিন ভাষায় নড়াচড়া করতে নিষেধ করেন সার্জন। কিন্তু স্থানীয় একটি উপভাষা ছাড়া আর কোনো ভাষা না জানায় সার্জনের কথা বুঝতে পারেননি বৃদ্ধা, তাই এরপরও নড়াচড়া করতে থাকেন। একপর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে রোগীকে আঘাত করেন চিকিৎসক।
এয়ার চায়না তাদের বিবৃতিতে বলেছে, জরুরি পরিস্থিতিতে ওই সার্জন তার রোগীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিলেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চিকিৎসকের ঘুসিতে বৃদ্ধার কপালে দাগ তৈরি হয়েছিল।
ভুক্তভোগীর ছেলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং তাদের ৫০০ ইউয়ান (৭ হাজার ৬০০ টাকা প্রায়) ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
এয়ার চায়না বলেছে, হাসপাতালটি যথাসময়ে সদরদপ্তরে খবর জানাতে ব্যর্থ হয়েছিল। এ কারণে গত সপ্তাহে গুইয়াং হাসপাতালের সিইও’কে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ‘গুরুতর নিয়ম লঙ্ঘনের’ কারণে অভিযুক্ত সার্জনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পরিচালনা কর্তৃপক্ষ।