OMG! “রান্নার তেল দিয়ে উড়বে প্লেন?”-নতুন গবেষণা করছে বিজ্ঞানীরা, জেনেনিন বিস্তারিত

আমরা সাধারণত তেলে কিছু ভাজার পর সেই তেল ফেলে দিই। কিন্তু এই ফেলে দেওয়া তেল কি উড়োজাহাজ চালাতে ব্যবহার করা যায়? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে স্পেনে চলছে গবেষণা। এই উদ্যোগে সহায়তা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

স্পেনের বিমানসংস্থা আইবেরিয়া ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের ১০ শতাংশ ফ্লাইট এই তেল থেকে তৈরি জ্বালানি দিয়ে চালানোর পরিকল্পনা করেছে। এয়ারলাইন সাস্টেইনেবিলিটির পরিচালক টেরেসা পারেখো বলেন, “গবেষণায় দেখা গেছে, টেকসই জ্বালানি শিল্পখাত গড়ে তোলার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে স্পেনে।” তিনি আরও জানান, “উড়োজাহাজ চলাচল খাতকে পরিবেশবান্ধব করা আমাদের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমরা ইউরোপের প্রান্তে অবস্থিত এবং আমাদের অনেক দ্বীপ রয়েছে, যেগুলোকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রাখতে হবে।”

বর্তমানে ভাজাপোড়ার তেল থেকে টেকসই কেরোসিন তৈরিতে সাধারণ জ্বালানির তুলনায় তিন গুণ বেশি খরচ হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরবরাহ বাড়লে এই জ্বালানির দাম কমে আসবে। স্পেনের আন্দালুসিয়ায় একটি নতুন রিফাইনারি তৈরির কাজ চলছে, যেখানে আরও বর্জ্যকে জ্বালানিতে রূপান্তর করা হবে। এটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় এই ধরনের রিফাইনারি হতে চলেছে। এছাড়া, মাদ্রিদের একটি গবেষণাগারে রেপসল কোম্পানি উড়োজাহাজ খাতে অপরিশোধিত তেলের বিকল্প হিসেবে কী ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে কাজ করছে।

অন্যদিকে, জার্মান এয়ারোস্পেস সেন্টার ভাজাপোড়া তেল থেকে তৈরি জ্বালানির পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেছে। তারা একটি পরীক্ষায় দুটি উড়োজাহাজ ব্যবহার করেছে। প্রথমটিতে সাধারণ জ্বালানি এবং দ্বিতীয়টিতে রান্নার তেল থেকে তৈরি টেকসই জ্বালানি ব্যবহার করে ধোঁয়া পর্যবেক্ষণ করা হয়। জার্মান এয়ারোস্পেস সেন্টারের ক্রিস্টিয়ানে ফোইগ্ট বলেন, “আমরা দেখেছি, টেকসই জ্বালানি ব্যবহারে ধোঁয়া কম নির্গত হয়। এতে বরফের স্ফটিক কমে এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে সাহায্য করে।”

এই খাতকে এগিয়ে নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইইউ মনে করে, উড়োজাহাজে অবশ্যই দুই শতাংশ টেকসই জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই হার ছয় শতাংশ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে ৭০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে তারা।

এই গবেষণা ও উদ্যোগ পরিবেশ সংরক্ষণের পাশাপাশি টেকসই উন্নয়নের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। স্পেনের এই প্রকল্প সফল হলে ভবিষ্যতে বিমান চলাচল খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসতে পারে।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy