
যে বাবাকে সন্তানের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল বলে মনে করা হয়, সেই বাবাই যখন লালসার শিকার হন, তখন প্রশ্ন ওঠে – মেয়েদের নিরাপত্তা তবে কোথায়? পূর্ব বর্ধমানের বুলবুলিতলায় এমনই এক লোমহর্ষক ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে নিজের বাবা ও বাবার বন্ধুর ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক কিশোরী। এই ঘটনা শুধু পরিবারে নয়, গোটা সমাজে এক ভয়ঙ্কর নিরাপত্তাহীনতার ছবি তুলে ধরেছে।
ঘটনার প্রায় দু’মাস পর, মেয়েটির মাসির অভিযোগের ভিত্তিতে অবশেষে মহারাষ্ট্র থেকে অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেফতার করেছে বুলবুলিতলা ফাঁড়ির পুলিশ। তবে, ঘটনার আরেক অভিযুক্ত এখনও পলাতক।
ধৃত বাবাকে গতকাল, বুধবার, কালনা মহকুমা আদালতে তোলা হলে পুলিশ ৬ দিনের হেফাজতের আবেদন জানায়। দীর্ঘ শুনানির পর আদালত অভিযুক্তকে ২ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। জানা গিয়েছে, বুলবুলিতলা থানা এলাকার ওই কিশোরী তার মাসির বাড়িতেই থাকত এবং মাঝে মাঝে বাবার বাড়িতে আসত। অভিযোগ, গত মার্চ মাসে বাবাকে বিশ্বাস করে বাবার বাড়িতে এলে, বাবা ও তার এক বন্ধু মিলে তাকে ধর্ষণ করে। এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পর মেয়েটি তার মাসিকে সব কথা খুলে বলে। এরপরই মাসি বুলবুলিতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুলবুলিতলা ফাঁড়ির পুলিশ দল মহারাষ্ট্রে হানা দেয় এবং অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে। অভিযুক্ত অবশ্য নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছে। তার বক্তব্য, বেশ কয়েক বছর ধরে স্ত্রীর সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই এবং এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে।
এই ঘটনা আবারও সমাজের গভীরে শিকড় গেড়ে থাকা বিকৃত মানসিকতা এবং নারী সুরক্ষার চ্যালেঞ্জকে সামনে নিয়ে এল। নিজের জন্মদাতার কাছেই যখন একজন মেয়ে নিরাপদ নয়, তখন সমাজের কোন স্তরে গিয়ে মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, সেই প্রশ্নই এখন সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।