কথায় বলে, ভালোবাসা অন্ধ। কিন্তু অন্ধপ্রেম যে কত বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন এক ব্যাংক ম্যানেজার। প্রেমিকার জন্য বিরাট অংকের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে জেলে রয়েছেন তিনি।
পুলিশের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, অভিযুক্তের নাম হরি শংকর। বেঙ্গালুরুর হনুমন্তনগরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের ম্যানেজার তিনি। সম্প্রতি ডেটিং অ্যাপে এক তরুণীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল শংকরের। ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্ক গভীর হয়। আর তারপরই ব্যাংক থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে প্রেমিকার সামনে ‘হিরো’ হওয়ার চেষ্টা করেন সেই ব্যক্তি।
ওই ব্যাংকের জোনাল ম্যানেজারের অভিযোগ, আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে ৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা (৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা প্রায়) তুলে নিয়েছেন ব্যাংক ম্যানেজার শংকর। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৩ থেকে ১৯ মে’র মধ্যে। এতে শংকর একা নয়, সাহায্য করেছেন ব্যাংকের দুই সহকর্মী কৌশল্যা এবং মুনিরাজুও।
ব্যাংক থেকে অর্থ লোপাটের অভিযোগে এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে শংকরকে। আপাতত ১০ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন অভিযুক্ত। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তার দুই সহকর্মীকেও।
পুলিশ জানিয়েছে, এক নারী গ্রাহক ওই ব্যাংকে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করেছিলেন, যা দেখিয়ে ৭৫ লাখ টাকা লোন নেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র ব্যাংকে জমা দিয়েছিলেন তিনি।
অভিযোগ, সেই কাগজপত্র এবং ফিক্সড ডিপোজিটকে কাজে লাগিয়েই প্রতারণার ছক কষেন শংকর। গ্রাহকের ওই অর্থকে সিকিউরিটি হিসেবে রেখে ৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয় ওই ব্যাংক থেকে। এই অর্থ কয়েক ভাগে ভাগ করে পশ্চিমবঙ্গ-কর্ণাটকের বিভিন্ন শহরের মোট ২৮টি আলাদা আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রেখে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানতে পেরেছে, এই বিপুল অর্থ সরাতে মোট ১৩৬ বার ব্যাংক লেনদেন করা হয়েছিল। আর সেই কাজে শংকরকে সাহায্য করেন ওই দুই সহকর্মী। তবে তাদের জোর করে এ কাজ করানো হয়েছে কি না, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন শংকর। তার দাবি, ডেটিং অ্যাপে তরুণীর সঙ্গে আলাপের লোভ দেখিয়ে তার থেকে এই বিরাট অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে সাইবার অপরাধীরা। অভিযুক্তের এই বয়ানও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।