
জনসেবার বদলে প্রকাশ্যে মারামারির অভিযোগ উঠলো এক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে! এবার পানিহাটির ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার শ্রাবন্তী রায়ের বিরুদ্ধে এক মহিলা স্কুটি চালককে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে। এর পাল্টা হিসেবে ওই তরুণীও কাউন্সিলারের চুলের মুঠি ধরে তাকে পেটান। মঙ্গলবার পানিহাটি মহোৎসবতলা ঘাটের সামনে এই ঘটনা ঘটে, যা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক শোরগোল পড়েছে। এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলেও, পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি।
কী ঘটেছিল সেদিন?
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কাউন্সিলার শ্রাবন্তী রায় তার স্কুটিতে চড়ে ঘাটের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎই সামনে থেকে আসা অন্য একটি স্কুটি তার স্কুটিতে ধাক্কা মারে। এতে ক্ষুব্ধ হন শ্রাবন্তী এবং প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, এরপরই তরুণী স্কুটি চালক পাল্টা গালিগালাজ শুরু করেন। এতে কাউন্সিলারের মাথা গরম হয়ে যায় এবং তিনি স্কুটি থেকে নেমে ওই তরুণীকে চড় মেরে বসেন বলে অভিযোগ। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতেও (যদিও এর সত্যতা যাচাই করা হয়নি) একই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
প্রকাশ্যে ধুন্ধুমার মারামারি
চড় খেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তরুণী। তিনি পাল্টা কাউন্সিলারের চুলের মুঠি ধরে মারতে শুরু করেন এবং পিঠে কিল-চড়-থাপ্পড় বসিয়ে দেন। কাউন্সিলারও পাল্টা তেড়ে গিয়ে তরুণীকে মারতে শুরু করেন। মুহূর্তেই রাস্তার মাঝে ভিড় জমে যায়। দু-চারজন তাদের ছাড়ানোর চেষ্টা করেন, আর কেউ কেউ মোবাইল ফোনে পুরো ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করতে শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই খড়দহ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং দু’পক্ষকে থামায়।
থানায় অভিযোগ নেই, বিজেপির কটাক্ষ
এই ঘটনা নিয়ে থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি। কাউন্সিলার শ্রাবন্তী রায় পরে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “বাচ্চা মেয়ে। ওর ভবিষ্যতের কথা ভেবে পুলিশকে কিছু জানাইনি।” খড়দা থানা সূত্রেও জানানো হয়েছে, কাউন্সিলার এবং ওই তরুণী নিজেদের মধ্যে বিষয়টি মিটমাট করে নিয়েছেন।
তবে এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতা জয় শাহ বলেন, “কাউন্সিলার পরিষেবা দেওয়ার বদলে সাধারণ মানুষকে মারধর করছেন। এর থেকে লজ্জার আর কী হতে পারে! অযোগ্য লোকেদের চেয়ারে বসিয়েছে তৃণমূল। ক্ষমতার অপব্যবহার হচ্ছে।”
এই ঘটনাটি আবারও প্রকাশ্যে জনপ্রতিনিধিদের আচরণ এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের দিকে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে। যদিও বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে, কিন্তু জনসমক্ষে এমন ঘটনায় স্থানীয় রাজনীতিতে এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে।