
পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় নিজেরই সহকর্মীর গুলিতে প্রাণ হারালেন এক কর্তব্যরত বিএসএফ জওয়ান। জেলার একটি সংবেদনশীল এলাকায় শান্তি ফেরাতে মোতায়েন থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যের এমন মৃত্যুতে সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ানকে ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এবং তার রাইফেলটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদ জেলার সেই স্থানে, যেখানে কয়েক সপ্তাহ আগে এক ভয়াবহ গোষ্ঠী সংঘর্ষ ঘটেছিল। স্থানীয় মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিএসএফ জওয়ানদের সেখানে মোতায়েন করা হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত জওয়ানের সঙ্গে ১৯ নম্বর ব্যাটেলিয়নের বিএসএফ জওয়ান এস কে মিশ্রের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এই বচসা চলাকালীনই এস কে মিশ্র তার রাইফেল থেকে একটানা ১৩ রাউন্ড গুলি চালান। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন ওই জওয়ান। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযুক্ত এস কে মিশ্র রাজস্থানের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। পুলিশ ও বিএসএফের পদস্থ কর্মকর্তারা এই ঘটনার কারণ জানতে বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ব্যক্তিগত কোনো বিষয় নিয়েই এই বচসা চরম আকার ধারণ করেছিল।
মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত এস কে মিশ্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি ডিউটির সময় নিরাপত্তা প্রোটোকল এবং আচরণবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনায় এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা, যারা কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিলেন, তারা এই ঘটনায় আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাদের প্রশ্ন, যেখানে রক্ষকরাই পরস্পরের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছেন, সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে মুর্শিদাবাদের কয়েকটি এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের পর থেকেই সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে একজন জওয়ানের এই ধরনের মৃত্যু নতুন করে অনেক প্রশ্ন তুলছে। আপাতত সকলের দৃষ্টি তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টের দিকে।