
আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ জেট বিমান কলোরাডোর ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করার পর আগুন ধরে যায়। বিমানটির যাত্রী ও ক্রুদের ডানার মাধ্যমে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (এফএএ) জানায়, বিমানটি ডেনভারের কাছাকাছি কলোরাডো স্প্রিংস থেকে টেক্সাসের ডালাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে উড্ডয়নের পর ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দেয়। ক্রুদের ‘ইঞ্জিনে কম্পন’ এর রিপোর্ট দেওয়ার পর স্থানীয় সময় বিকাল সোয়া ৫টার দিকে বিমানটিকে ডেনভার বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। অবতরণের পর পার্কিংয়ে যাওয়ার পথে বিমানটির ডান ইঞ্জিনের নিচে আগুন ধরে যায়।
বিমানবন্দরের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, যাত্রীরা বিমানের ডানায় হেঁটে বের হচ্ছেন, তাদের কারও কারও হাতে ব্যাগ। বিমানের পাশেই কালো ধোঁয়া ও আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায়। গ্রাউন্ড ক্রুরা দ্রুত মই এনে যাত্রীদের উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন। এছাড়া, বিমানের পেছনের দরজা থেকে ফুলানো স্লাইডের মাধ্যমে যাত্রীদের নিরাপদে নামানো হয়।
বিমানবন্দরের মুখপাত্র মাইকেল কোনোপাসেক জানান, এই ঘটনায় বিমানবন্দরের অন্যান্য ফ্লাইটের উড্ডয়ন বা অবতরণে কোনো বাধা সৃষ্টি হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘আগুন ও ধোঁয়া বিমানবন্দরের একাধিক গেইট থেকে দেখা গেলেও পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।’’
এই বিমানে ১৭২ জন যাত্রী ও ৬ জন ক্রু ছিলেন। আমেরিকান এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এই ঘটনায় যাত্রী ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। এফএএ ও জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ড (এনটিএসবি) ঘটনার কারণ তদন্ত শুরু করেছে।
এই ঘটনা উত্তর আমেরিকায় বিমান নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। গত জানুয়ারিতে ওয়াশিংটন ডিসির আকাশে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি জেটের সঙ্গে মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষে ৬৭ জন নিহত হন। সেই দুর্ঘটনার পর এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রকদের কাজের চাপ ও ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সরকারি ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে এফএএ-র কয়েকশ শিক্ষানবিশ কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। এই সিদ্ধান্তটি ওয়াশিংটন ডিসির আকাশে সংঘর্ষের কয়েক সপ্তাহ পর নেওয়া হয়। ট্রাম্পের নির্দেশে ইলন মাস্কের নেতৃত্বে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডিওজিই) যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় ব্যয় কাটছাঁটের কাজ চালাচ্ছে।
এই ঘটনায় বিমান নিরাপত্তা ও এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমান চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও কঠোর নজরদারি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন প্রয়োজন।