নিজের যৌবন দীর্ঘদিন ধরে রাখতে কে না চায়? যৌবন এমনি এক জিনিস, যা ধরে রাখতে চান সবাই। যদিও আমাদের বয়স বাড়ে প্রাকৃতিক নিয়মেই। কিন্তু সত্যটা এই যে- কেউই আসলে তা মন থেকে মেনে নিতে পারেন না। তাইতো, নিজেকে চির তরুণ রাখতে এবং নিজের যৌবন অনন্তকাল ধরে রাখতে আমাদের চেষ্টার অন্ত নেই!
তারুণ্য বা যৌবন ধরে রাখতে অনেকেই কসমেটিক সার্জারি, ওষুধ, বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান গ্রহণ করে থাকেন। তবে কখনো কি শুনেছেন যৌবন ধরে রাখতে নিজের প্রস্রাব খেতে? কি বিশ্বাস হচ্ছে না? বিশ্বাস না হলেও এমনটাই করেন হ্যারি ম্যাটাডিন নামক এক ব্যক্তি।
ঘটনার সূত্রপাত প্রায় ছয় বছর আগে। মানে সেই ২০১৬ সালে। মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সেই সময় থেকে এই সমস্যার সঙ্গে বুঝতেই নিজের মূত্র-পানের পন্থা বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
যাই হোক, বেশি হেঁয়ালি না-করে বিষয়টা ভেঙেই বলা যাক। নিজের মূত্রই পান করছেন হ্যাম্পশায়ারের এক যুবক। তা-ও আবার মাস-দুয়েকের পুরনো মূত্র। আর যুবকের এই কীর্তিই সাড়া ফেলে দিয়েছে পুরো বিশ্বে! এই অদ্ভুত অভ্যাসের কারণে পরিবারও সরে গিয়েছে দূরে। তাতেও কুছ পরোয়া নেই! নিজের অভ্যাস কিছুতেই বদলাননি যুবক। এমনকি, এই অভ্যাস সম্পর্কে বইও লিখে ফেলেছেন ঐ যুবক।
ঐ যুবকের দাবি, নিজের প্রস্রাব কোনো পাত্রে ধরে রাখেন এবং প্রতিদিন প্রায় ২০০ মিলিলিটার মূত্র পান করেন তিনি। আর এতে না কি হাতেনাতে পেয়েছেন উপকারও! তার মনে এসেছে শান্তি এবং শান্তও হয়েছে মন।
শুধু তাই নয়, হ্যারি নিজের মূত্র পান করার পাশাপাশি চোখেমুখেও মূত্রের ছিটে দিয়ে নেন। এটাই না কি তার চিরযৌবন ধরে রাখার গোপন রহস্য! এই প্রসঙ্গে হ্যারির দাবি, তার রূপচর্চার অঙ্গ এই পুরনো মূত্র। মুখে তিনি তা ঘষে থাকেন এবং এতে না কি তার ত্বক নরম ও জেল্লাদার হয়েছে।
হ্যারি জানিয়েছেন, ইউরিন থেরাপির গুণাগুণ সম্পর্কে পড়েছিলেন তিনি। আর সেই উপকারিতার বিষয়ে পড়ে তবেই এই অভ্যাস নিজেও শুরু করেন। হ্যারি আরো বলেন, ‘আমি যখন এটা খাই, তখন বুঝতে পারি এর উপকারিতা। যা আমার কল্পনাশক্তিরও বাইরে!
এটা খাওয়ার পর থেকে আমার মস্তিষ্ক ও মন উজ্জীবিত হয়েছে এবং আমার ডিপ্রেশনও উপশম হয়েছে। এমনকি আমার মনও শান্ত হয়েছে। আর এটা তো আমি বিনামূল্যেই পেয়ে যাচ্ছি! এমনকি এতে আমার শরীর এবং মন- দুইই সুস্থ থাকছে।’
তবে কীভাবে নিজের প্রস্রাব পান করেন হ্যারি? তিনি মূলত ভেগান ডায়েটে থাকেন এবং ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করেন। অর্থাৎ দিনের মধ্যে এক বারই খাওয়াদাওয়া করেন। হ্যারির দাবি, প্রতিদিন তিনি মাস-খানেকের পুরনো ২০০ মিলিমিটার প্রস্রাব পান করেন। অবশ্য ঐ পানীয়ের মধ্যে তিনি অল্প পরিমাণে টাটকা মূত্রও মিশিয়ে নেন।
হ্যারির বক্তব্য, টাটকা প্রস্রাব কিন্তু সকলে যতটা খারাপ বলে মনে করেন, ততটাও নয়। আদতে এর কোনো সেরকম খারাপ গন্ধ বা স্বাদ থাকে না। তবে এক মাসের পুরনো প্রস্রাবে কড়া গন্ধ হয়। আর স্বাদেও তা বেশ পরিশোধিত। এর সঙ্গে খাপ খাওয়াতে একটু সময় লাগেই।
সেই সঙ্গে ঐ যুবক আরো বলেন, ‘আমার আসলে এক মাসের পুরনো প্রস্রাবের গন্ধই এখন বেশি ভালো লাগে। আর এটা খাওয়ার পর নানা উপকার ও আনন্দ পাই আমি। সব মিলিয়ে এই ইউরিন থেরাপি আমার জীবনই বদলে দিয়েছে।’
শুধু হ্যারিই নন, এর আগেও বহু মানুষ ইউরিন থেরাপির দাবি তুলেছিলেন। তবে এই বিষয়টির কি আদৌ কোনো ভিত্তি রয়েছে? কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা? এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বক্তব্য, মূত্র তো শরীরের বর্জ্য। এর মধ্যে রয়েছে ৯০ শতাংশ জল, বাকি অ্যামোনিয়া এবং লবণ।
শুধু তাই নয়, মূত্রে নানা রকম ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থও বিদ্যমান। তাই মূত্র পান করার অথবা ত্বকে প্রয়োগ করার কোনো উপকারিতা সম্পর্কে এখনও কোনো প্রমাণিত তথ্য কিন্তু নেই। বরং মূত্র পান করলে ডিহাইড্রেশন বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়ে এবং শরীরে ব্যাকটেরিয়ারও উপদ্রব তৈরি হয়। আর নির্দিষ্ট কারণেই বর্জ্য পদার্থ বর্জ্যই হয়!
সূত্র: ডেইলি মেইল