OMG! ভারতের জনপ্রিয় সিঙাড়া নিষিদ্ধ যে দেশে, খেলেই হয় জরিমানা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যা অঞ্চলের বহুল জনপ্রিয় একধরনের ভাজা নাস্তা। অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন, ফার্সি শব্দ ‘সংবোসাগ’ থেকেই এই সিঙাড়া শব্দের উৎপত্তি। তাদের দাবি, গজনবী সাম্রাজ্যে সম্রাটের দরবারে এক প্রকারের নোনতা মুচমুচে খাবার পরিবেশন করা হতো। যার মধ্যে কিমা, শুকনা বাদাম জাতীয় অনেক কিছু দেওয়া হতো। এটাই নাকি সিঙাড়ার আদি রূপ।

সিঙাড়ার আকৃতি ত্রিকোণ বা পিরামিডের মতো- খোলসের মধ্যে নানারকম পুর ভরা থাকে। পুর হিসেবে সাধারণত আলু, মটরশুঁটি ও বিভিন্ন সবজির তরকারি দেওয়া হয়

উইকিপিডিয়াতে বলা আছে, সিঙাড়া হলো সমুচার বাঙালি সংস্করণ। সিঙারা সাধারণত নোনতা হয় তবে মিষ্টি ক্ষীরের সিঙাড়া ব্যতিক্রম, ক্ষীরের সিঙাড়ার ক্ষেত্রে পুর মিষ্টি ক্ষীর দিয়ে তৈরি করা হয়। চায়ের সঙ্গে গরম গরম সিঙাড়া পরিবেশন করা হয়ে থাকে, সঙ্গে থাকে কোনো রকম চাটনি। যেমন, তেঁতুলের চাটনি, টমেটোর চাটনি ।

ইরানি ইতিহাসবিদ আবুল ফজল বায়হাকি দাবি করেন, ইরান থেকেই নাকি সিঙাড়া ভারতীয় উপমহাদেশে এসেছে। অর্থাৎ, তার মতে সিঙাড়ার জন্মস্থান ইরান। আবুল ফজল বায়হাকির ‘তারিখ-এ-বেহাগি’ বইয়েও ‘সাম্বোসা’র উল্লেখ করা হয়েছে। আবুল ফজলের দাবি অনুযায়ী, ইরানের এই সাম্বোসাই সিঙাড়ার আদি রূপ। আমির খসরুর রচনাতেও এর উল্লেখ রয়েছে।

তবে সিঙ্গাড়ার জন্মস্থান নিয়ে মতভেদ আর বিতর্ক থাকলেও এ অঞ্চলে আসার পর যে এর স্বাদ আর উপকরণে আমূল পরিবর্তন এসেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই! যেমন, ষোড়শ শতকে পর্তুগিজরা ভারতের মাটিতে পা রাখার পর এই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে ‘আলু’ সবজির পরিচয় হয়। বলতে গেলে আলু হলো বাঙালির অন্যতম পছন্দের সবজি। এই সবজিটিই পরবর্তীতে সিঙাড়ার মূল উপকরণ হয়ে ওঠে।

মাংসের সিঙাড়া, ফুলকপির সিঙাড়া, পনিরের সিঙাড়া, ক্ষিরের সিঙাড়া ইত্যাদি নানা রকমের বা নানা স্বাদের সিঙাড়ার চল থাকলেও ভেতরে আলুর দেওয়া সিঙাড়াই সবচেয়ে জনপ্রিয়। তাই তো আলু ছাড়া সি সিঙাড়ার কথা ভাবাই কঠিন।

শুনলে হয়তো অবাক হবেন যে, এমন দেশও আছে যেখানে সিঙাড়া খাওয়া নিষিদ্ধ। দেশটির নাম সোমালিয়া। এই দেশে সিঙাড়া ভক্ষণ নিষিদ্ধ। কেউ ভুল করেও এদেশে সিঙাড়া খেতে পারে না! শুধুমাত্র আকারের জন্য সিঙাড়া সে দেশে নিষিদ্ধ। কারণ এটি ত্রিকোণাকার। সে দেশের একদল মৌলবাদী মনে করে এই ত্রিকোণাকার আসলে খ্রিস্টিয় সম্প্রদায়ের ধর্মায় সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত। আরো আছে। সোমালিয়ায় সিঙাড়াকে উগ্রতার প্রতীক ধরা হয়ে থাকে। আর সিঙাড়ার ভিতরে পুর হিসেবে যে মাংস ব্যবহার করা হয়, তার গুণমান নিয়েও অনেকের আপত্তি আছে। সব মিলিয়ে সোমালিয়া সিঙাড়া নিয়ে খুবই স্পর্শকাতর। তাই সে দেশে সিঙাড়া বানানো, কেনা বা খাওয়া নিষিদ্ধ।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy