করোনাভাইরাস নয়, ‘অশুভ আত্মাদের’ ভয়ে ত্রস্ত গোটা গ্রামে নিজেরাই লকডাউন জারি করেছেন বাসিন্দারা! শুধু তাই নয়, সেই ‘অশুভ আত্মাদের’ হাত থেকে বাঁচতে পুজা-যজ্ঞও চলছে ধুমধাম করে।
সম্প্রতি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার সারুবুজ্জিলি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। গত ১৭ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়েছে এই লকডাউন। শুধু তাই নয়, গ্রামবাসীদের প্রত্যেককে সতর্ক করা হয়েছে তারা যেন কোনও ভাবেই গ্রাম ছেড়ে না বের হন। কেন না, গ্রামের বাইরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সেই ‘অশুভ আত্মারা’। কেউ যদি গ্রামের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেন, তা হলে তার প্রাণহানি হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। আর সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে গত কয়েক দিন ধরে নিজেদের ঘরবন্দি করে রেখেছিলেন গ্রামবাসীরা।
‘অশুভ আত্মা’র ভয়ে গ্রামবাসীরা লকডাউন ঘোষণা করেছেন, এই খবর পুলিশের কাছে পৌঁছতেই তারা দ্রুত সারুবুজ্জিলি গ্রামে পৌঁছায়।
শ্রীকাকুলামের পুলিশ সুপার জিআর রাধিকা জানান, গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে লকডাউন তোলা হয়েছে। একই সঙ্গে সতর্কও করা হয়েছে নিজেদের মতো করে এ রকম পদক্ষেপ যেন না করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, “গত কয়েক দিন ধরে গ্রামবাসীরা নিজেদের ঘরবন্দি করে রেখেছেন। পুজো-আর্চা করছেন। যত ক্ষণ না এই পুজো-আর্চা সম্পন্ন হবে, তত ক্ষণ পর্যন্ত গ্রামের বাইরে কেউ যেন না যান, এমনও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে গ্রামবাসীদের। ফলে কেউ সাহস করে আর বেরোচ্ছিলেন না।”
শ্রীনু নামে এক গ্রামবাসীর দাবি, গত তিন মাসে হঠাৎ পাঁচ গ্রামবাসী পর পর মারা যান। তাদের মধ্যে পঞ্চায়েত প্রধানও রয়েছেন। কেন হঠাৎ করে এত জনের মৃত্যু হল, তা নিয়ে গ্রামবাসীরা এক গুণিনের দ্বারস্থ হন। তখন তিনি বলেন, গ্রামে ‘অশুভ আত্মা’র আবির্ভাব হয়েছে। কেউ সুরক্ষিত নন। তার পর থেকেই নিজেদের ঘরবন্দি করা শুরু করেন গ্রামবাসীরা।
আরও এক গ্রামবাসী পার্থসারথির কথায়, “মহামারির সময় যেমন লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল কোভিডের থেকে মুক্তি পেতে, এ বার অশুভ আত্মার থেকে মুক্তি পেতে ফের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।”