
বাবাকে আদর্শ মেনেই আইআইটির পথে না হেঁটে সেনাবাহিনীতে যোগদানের সংকল্প নিয়েছিলেন বীরভূমের তরুণ ইমন ঘোষ। মায়ের আপত্তি সত্ত্বেও নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমির (NDA) দ্বিতীয় দফার পরীক্ষায় দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন ইমন। আকাশপথে দেশের দিকে ধেয়ে আসা যেকোনো বিপদ রুখে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি, যার প্রথম ধাপ ফ্লাইং অফিসার হওয়ার লড়াইয়ে এই অভাবনীয় সাফল্য।
১৮০০ নম্বরের পরীক্ষায় ইমন পেয়েছেন ১০৮৪ নম্বর। তাঁর এই সাফল্যের পেছনে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন বাবা উজ্জ্বলকুমার ঘোষ, যিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। ইমন জানান, বাবার সেনাবাহিনীর উর্দি দেখেই তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন। এই কৃতিত্বের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ইমনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
উজ্জ্বলকুমার ঘোষ যখন পাঠানকোট এয়ারবেসের পাশে কর্মরত ছিলেন, তখন কাছ থেকে ফ্লাইং অফিসারদের জীবনযাত্রা, দায়িত্ব ও শৃঙ্খলা দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন ইমন। সেই সময় থেকেই ফ্লাইং অফিসার হয়ে দেশের সেবা করার লক্ষ্য স্থির করেন এই মেধাবী ছাত্র।
পড়াশোনার পাশাপাশি গিটার ও যুক্তিতেও পারদর্শী ইমন
ইমনের মা গার্গী ঘোষ জানান, তাঁর স্বামীই ছেলের প্রধান অনুপ্রেরণা। পড়াশোনার পাশাপাশি ইমন গিটার বাজাতে ভালোবাসে এবং বিভিন্ন বিতর্ক সভায় যুক্তির জাল বোনায় তার দক্ষতা রয়েছে। তবে, মা চেয়েছিলেন ছেলে আইআইটিতে পড়াশোনা করুক এবং সেইজন্য ইমনকে বুঝিয়েওছিলেন। কিন্তু দেশের সেবাই ছিল ইমনের একমাত্র লক্ষ্য। শেষ পর্যন্ত ছেলের স্বপ্নকে সমর্থন করছেন মা।
কীভাবে এই অসাধ্য সাধন করলেন ইমন?
বাবার চাকরির সুবাদে ইমন বিভিন্ন স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে তিনি বোর্ডিং স্কুলে পড়াশোনা করছেন। প্রথমে হরিয়ানার কুঞ্জপুরা সৈনিক স্কুল এবং বর্তমানে রাষ্ট্রীয় ইন্ডিয়ান মিলিটারি কলেজে (RIMC)-তে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন ইমন। সেখানেই তিনি এনডিএ-র জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইমনকে তাঁর সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে লেখেন, ‘বীরভূমের ইমন ঘোষ ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি-র পরীক্ষা (দ্বিতীয়)-তে প্রথম হয়েছে জানতে পেরে আমি আনন্দিত এবং গর্বিত।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ইমন সমস্ত ইউপিএসসি পরীক্ষার্থীর জন্য এক উজ্জ্বল অনুপ্রেরণা।