ISRLvsIRN: পেজেশকিয়ান-নেতানিয়াহুকে ফোন পুতিনের, দিলেন মধ্যস্থতার প্রস্তাব

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সর্বাত্মক সংঘাতের পারদ যখন ক্রমশ চড়ছে, ঠিক তখনই শান্তি ফেরাতে আসরে নেমেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার তিনি একদিকে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এবং অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু— উভয়ের সঙ্গেই টেলিফোনে কথা বলেছেন। শুধু তাই নয়, দুই দেশের মধ্যে এই যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার পুতিন এই টেলিফোন কথোপকথন করেছেন বলে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়, ক্রেমলিন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আজ শুক্রবার প্রেসিডেন্ট পুতিন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানকে টেলিফোন করেছিলেন। টেলিফোনে তিনি ইরানে ইসরায়েলের হামলায় নিহতদের পরিবার-স্বজনদের প্রতি আন্তরিক শোক জানিয়েছেন।” পুতিন ইরানের প্রেসিডেন্টকে স্পষ্ট জানিয়েছেন, “ইসরায়েলের এই হামলা জাতিসংঘের সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী।”

একই দিনে, “ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকেও টেলিফোন করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে উত্তেজনা আরও না বাড়াতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।”

ক্রেমলিনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে যে উত্তেজনা শুরু হয়েছে, তা থামানোর জন্য মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে রাশিয়ার নাম প্রস্তাব করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনি বলেছেন, পরমাণু প্রকল্প ও অন্যান্য যেসব ইস্যু নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে— সেসব আলোচনা ও কূটনৈতিক পন্থায় সমাধান করা সম্ভব।”

উল্লেখ্য, এই সংঘাতের সূত্রপাত গত ১৩ জুন, শুক্রবার ভোর ৪টায়। ইসরায়েলের বিমানবাহিনী (আইএএফ) ইরানের রাজধানী তেহরানসহ অন্তত ৮টি শহরে বড় ধরনের বিমান হামলা চালায়। এতে অন্তত ৭৮ জন নিহত এবং প্রায় ৩০০ জন আহত হন। নিহতদের মধ্যে ইরানের সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি সহ সামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও রয়েছেন। ইসরায়েল এই সামরিক অভিযানের নাম দিয়েছিল ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ এবং দাবি করেছিল, তাদের লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু প্রকল্প ও সামরিক স্থাপনাগুলো। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হামলায় ইরানের অন্তত ১০০টি স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

অতর্কিত হামলার পর শুক্রবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ নামে পাল্টা সেনা অভিযান শুরু করে ইরান। এতে ইসরায়েলে একজন নিহত এবং ৪১ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এদিকে, সিএনএন-কে দেওয়া এক মন্তব্যে ইয়েশিয়েল লেইটার নামে ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংসের ব্যাপারে ইসরায়েল দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, “আমাদের হিসেব বলছে, আগামী ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে আমরা ইরানের পরমাণু প্রকল্প সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলতে পারব। মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্ববাসীর মঙ্গলের জন্য এটা আমাদের করতে হবে।”

এমন এক বিস্ফোরক পরিস্থিতিতে পুতিনের এই কূটনৈতিক উদ্যোগ আন্তর্জাতিক মহলে কতটা কার্যকর হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। আরটি (RT) সূত্রে এই খবর সামনে এসেছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy