
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার পারদ আবারও চরমে। মঙ্গলবার সকালে ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে সাইরেন বাজতে শুরু করেছে, যা নাগরিকদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা ইরানের ভূখণ্ড থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শনাক্ত করে তা প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। বিবিসির খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আইডিএফ এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে, “কিছুক্ষণ আগে ইরানের ভূখণ্ডের দিক থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার বিষয়টি শনাক্ত করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং এটি প্রতিহত করতে কাজ করছে তারা।” হামলার আশঙ্কায় ইসরায়েলি বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
তবে, এই হামলার মধ্যেই ইরানের পক্ষ থেকে এসেছে এক তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানিয়েছেন, তেহরানের সামরিক অভিযান তাদের স্থানীয় সময় ভোর ৪টা পর্যন্ত চলেছে। তিনি পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ইসরায়েল যদি তার ‘আগ্রাসন’ বন্ধ করে, তাহলে ইরানের ‘প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রাখার কোনো ইচ্ছা নেই’। আরাঘচি তার এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডেলে এক পোস্টে লিখেছেন, “ইসরায়েল যদি এখনই তার অবৈধ আগ্রাসন বন্ধ করে, তাহলে ইরানের প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রাখার কোনো ইচ্ছা নেই।”
তিনি আরও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, “ইসরায়েলকে স্থানীয় সময় ভোর ৪টার মধ্যে থামতে হবে।” আরাঘচি জোর দিয়ে বলেন, ইরান বারবার স্পষ্ট করে বলেছে যে, ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে, বিপরীতভাবে নয়।
আরাঘচি আরও জানিয়েছেন যে, এখন পর্যন্ত কোনো যুদ্ধবিরতি বা সামরিক অভিযান বন্ধ করার বিষয়ে কোনো ‘চুক্তি’ হয়নি। তবে তার শেষ বাক্যটিই কূটনৈতিক মহলে নতুন করে জল্পনা তৈরি করেছে: “যদি ইসরায়েলি সরকার তেহরানের সময় ভোর ৪টার মধ্যে ইরানি জনগণের বিরুদ্ধে তার অবৈধ আগ্রাসন বন্ধ করে, তবে এরপর প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রাখার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই।”
ইরানের এই শর্তসাপেক্ষ মন্তব্যকে অনেকে ‘যুদ্ধবিরতির ইঙ্গিত’ হিসেবে দেখছেন, যদিও একই সাথে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিশ্বজুড়ে নেতারা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানালেও, এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে, তা নিয়ে উদ্বেগ অব্যাহত রয়েছে।