
এখনও পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (BCCI) আইপিএল ২০২৫ প্লে অফের ম্যাচের ভেন্যু আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেনি। তবে এর মধ্যেই জোর জল্পনা চলছে যে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ইডেন গার্ডেন্স থেকে ফাইনাল ম্যাচটি সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। এই ম্যাচ আমেদাবাদে স্থানান্তরিত হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এই খবরে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীরা।
এই জল্পনার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই ইডেনের সামনে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সাধারণ সমর্থকরা। ফাইনাল ম্যাচ সরানোর এই সম্ভাব্য সিদ্ধান্তকে তাঁরা বঞ্চনা হিসেবেই দেখছেন।
যদিও ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল (CAB) বিষয়টিকে সরাসরি ‘বঞ্চনা’ বলতে নারাজ। তবে ম্যাচ সরানোর যুক্তির সঙ্গে একমত নন সিএবি সচিব স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “অবশ্যই এটা ঠিক, কলকাতা থেকে ম্যাচ সরানোর কোনও যুক্তি নেই। তবে এটাকে বঞ্চনা বলব না। কারণ, এর আগে টি২০ বিশ্বকাপের সময় আমরা বিসিসিআই-এর সাহায্য পেয়েছি। পাশাপাশি রামনবমীর দিন ম্যাচটা গুয়াহাটি সরে যেতে পারত, সেটা রিশিডিউল হয়েছে। বিসিসিআই-এর থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি।”
সরকারি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত আশাবাদী সিএবি। স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আইপিএল ফাইনাল তো রোজ হয় না, ১২ বছর পর ফাইনাল করার সুযোগ পেয়েছি। এর আগে ওপেনিংটাও আমরা দারুণভাবে করেছি। হয়ত শেষ অবধি দেখবেন, আইপিএল ফাইনাল এখানেই হচ্ছে।” তিনি মনে করেন, শেষ পর্যন্ত ইতিবাচক ফলই আসবে।
সিএবি’র তরফ থেকে এর আগেই বোর্ডকে চিঠি লিখে জানানো হয়েছে যে, আগামী ৩ জুন ইডেন আইপিএল ফাইনাল আয়োজন করতে সব রকম ভাবে প্রস্তুত। সেদিন শহরে কতটা কী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে, সেই সমস্ত তথ্য দিয়ে লেখা হয়েছে যে, সেদিন অল্প-বিস্তর বৃষ্টি হলেও ইডেনের উন্নত পরিকাঠামোয় পুরো ফাইনাল আয়োজন করা সম্ভব। তবে সেই চিঠির কোনও উত্তর এখনও বিসিসিআই-এর পক্ষ থেকে আসেনি।
এরই মধ্যে বিসিসিআই কর্তাদের সঙ্গে মৌখিকভাবে কথা বলেছেন স্নেহাশিস। সিএবি কর্তা জানান, “বিসিসিআই কর্তাদের বক্তব্য, ৩ জুন কলকাতায় বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সেই কারণেই এখান থেকে ম্যাচ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।” এর উত্তরে স্নেহাশিস বলেন, বৃষ্টির সম্ভাবনা এই সময় প্রায় গোটা দেশেই রয়েছে। ২৭ মে কেরলে বর্ষা ঢুকছে, তার ১৫ দিন পর কলকাতায় বর্ষা আসার সম্ভাবনা থাকে। তিনি গত মরশুমের বেঙ্গল প্রিমিয়ার লিগের উদাহরণ টেনে বলেন, গত বছর ১১ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত টুর্নামেন্ট চললেও বৃষ্টির জন্য মাত্র একটি ম্যাচ খেলা হয়নি। প্রায় ৬৩টা ম্যাচের মধ্যে ইডেন সফলভাবে বাকিগুলি আয়োজন করেছিল।
বাংলা ক্রিকেট মহলের অনেকেই এবং সাধারণ সমর্থকরাও মনে করেন, ইডেনের গ্রাউন্ড কভার থেকে শুরু করে উন্নত মানের সুপার সপার এবং সর্বোপরি সেরা নিকাশি ব্যবস্থা থাকায় অঝোর বৃষ্টি হলেও পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্যে খেলা শুরু করে দেওয়া সম্ভব। ভারতবর্ষের যে কোনও মাঠের তুলনায় ইডেনের নিকাশি ব্যবস্থা অনেক উন্নত।
যদিও বিসিসিআই এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি, ইডেন থেকে ফাইনাল সরানোর জল্পনা কলকাতা ও বাংলার ক্রিকেট মহলে চাপা উত্তেজনা তৈরি করেছে। সিএবি এবং সমর্থকরা আশা করছেন, শেষ পর্যন্ত ইডেনই ফাইনাল আয়োজনের সুযোগ পাবে।