
নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি—বলিউডের সেই নাম, যার অভিনয়ের গুণে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও মুগ্ধ সিনেমাপ্রেমীরা। পর্দায় তাঁর সাবলীলতা, চরিত্রের গভীরে ডুব দেওয়ার ক্ষমতা তাঁকে এনে দিয়েছে আজকের জায়গা। তবে এই উজ্জ্বলতার পেছনে রয়েছে অন্ধকারে মোড়া দীর্ঘ সংগ্রামের কাহিনি, যার এক ঝলক মিলেছে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে, যেখানে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল সাধারণ এক নাম—পার্লে-জি বিস্কুট।
সাক্ষাৎকারে তাঁকে মজার ছলে প্রশ্ন করা হয়েছিল, পার্লে-জি বিস্কুটে তাঁর কোনও অ্যালার্জি আছে কি না। প্রশ্ন শুনে হেসে ওঠেন নওয়াজ। উত্তর দিতে গিয়ে বলেন, “একটা সময় ছিল যখন সকালে চা-বিস্কুট, দুপুরে চা-বিস্কুট, আবার রাতে চা-বিস্কুট খেতাম।” তখন তিনি দিল্লিতে, অভিনয়ের স্বপ্নে বাঁচতেন, কিন্তু পকেটে ছিল না ঠিকঠাক খরচ করার সামর্থ্য। পার্লে-জি তখন শুধু বিস্কুট নয়, যেন তাঁর জীবনের একমাত্র ভরসাও ছিল।
এখনও পার্লে-জি খেতে ভালোবাসেন? প্রশ্ন শুনে একটু থেমে উত্তর দেন, “পার্লে-জি বিস্কুটের নাম এলেই আমি ফিরে যাই সেই সময়ের মধ্যে। সবারই তো এটা খেতে ভালো লাগে। কিন্তু আমি সেই স্মৃতিগুলোর মধ্যে আবার যেতে চাই না।” পুরনো কষ্টের ছায়া যেন এখনও রয়ে গেছে তাঁর মনে।
নওয়াজউদ্দিনের এই লড়াইয়ের কথা উঠে এসেছে তাঁর সহকর্মী ও বন্ধু মনোজ বাজপেয়ীর এক সাক্ষাৎকারেও। মনোজ জানান, অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে কথা বলে তিনি চেয়েছিলেন যেন কোনও চরিত্রে সুযোগ দেওয়া হয় নওয়াজকে, যাতে তাঁর কিছু রোজগার হয়। সেই প্রজেক্টে একটি ওয়েটারের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন নওয়াজ, যিনি মনোজের টেবিলে এসে অর্ডার নিচ্ছেন। শুটিংয়ের সময় মনোজের মনে হয়েছিল, এমন এক প্রতিভাবান অভিনেতাকে এর চেয়ে অনেক বড় চরিত্র দেওয়া উচিত। আক্ষেপ ছিল তাঁর।
তবে ভাগ্য ফিরে তাকায় নওয়াজের দিকেই। ধীরে ধীরে বলিউডে মিলেছে একের পর এক উজ্জ্বল চরিত্র। আজ তিনি কেবল অভিনেতা নন, বহু তরুণ শিল্পীর অনুপ্রেরণা।
পার্লে-জি বিস্কুট আর স্টুডিওর মেঝে—এই দুইয়ের মাঝে বাঁধা এক অনন্য যাত্রাপথের নাম নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি।