এক দশকের মধ্যে প্রথমবার গ্রাহক হারানোর জেরে যুক্তরাষ্ট্রে ১৫০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম নেটফ্লিক্স।
ওভার দ্য টপ-ওটিটি প্ল্যাটফরম হিসেবে বিশ্বের অন্যতম বড় বিনোদন মাধ্যমে পরিণত হওয়া নেটফ্লিক্স মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় তাদের কার্যালয় থেকে কর্মী কমানোর ওই ঘোষণা দেয়। এই দেড়শ কর্মী উত্তর আমেরিকায় নেটফ্লিক্সের মোট জনবলের ২ শতাংশ।
নেটফ্লিক্স জানিয়েছে, কোম্পানির আয় কমে যাওয়ায় তাদের কর্মী কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। গ্রাহক কমে যাওয়া ঠেকাতে এ বছর লড়তে হচ্ছে এই স্ট্রিমিং সেবা কোম্পানিকে।
নেটফ্লিক্স জানিয়েছে, “ব্যক্তির যোগ্যতার কারণে নয়, প্রাথমিকভাবে ব্যবসার চাহিদা বিবেচনায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এটা তাদের একটি কঠিন পরিস্থিতে ফেলেছে, আমরা আমাদের কর্মীদের কাউকেই বিদায় বলতে চাই না।”
কোন বিভাগের কর্মীদের ছাঁটাই করা হচ্ছে তা নেটফ্লিক্স প্রকাশ করেনি। তবে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নিয়োগ, যোগাযোগ ও কনটেন্ট বিভাগে কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রভাব পড়তে পারে।
অনেকেই তাদের চাকরি যাওয়ার খবর অনলাইনে প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে তারা হতাশা প্রকাশ করছেন।
বিশ্বজুড়ে নেটফ্লিক্সের ২২ কোটি গ্রাহক রয়েছে এবং এখনও তারা স্পষ্টভাবে বাজারের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্ল্যাটফরম ডিজনি প্লাস, এইচবিও, অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের।
গত মাসে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইউক্রেইনে যুদ্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রে গ্রাহক ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কারণে তাদের গ্রাহক কমেছে। যুদ্ধের কারণে ৭ লাখ গ্রাহক হারিয়েছে নেটফ্লিক্স।
কর্মী কমানোর পাশাপাশি কনটেন্ট কেনা এবং নিজস্ব নির্মাণও কমিয়ে দিয়েছে নেটফ্লিক্স। ব্যয় সংকোচনের চেষ্টায় মে মাসে অ্যানিমেশন সিরিজ পার্লের নির্মাণও বন্ধ ঘোষণা করা হয়, যেখানে মেগান মার্কেলের থাকার কথা ছিল।
কিছু বিশ্লেষক বলছেন, মহামারীর সময় সাইন-আপের ঊর্ধ্বগতির পর নেটফ্লিক্স এখন ব্যবসা বাড়ানোর সহজ উপায় খুঁজে পাচ্ছে না।
নেটফ্লিক্স একাই শুধু কর্মী ছাঁটাই করছে না। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো যেমন উবার ও টুইটারও জানিয়েছে, তারা নিয়োগ কমিয়ে দিচ্ছে বা স্থগিত রাখছে। এছাড়া অনলাইন কোম্পানি কারভানাও ব্যবসা কমার কথা জানিয়ে কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করছে।