
মাহেশ জগন্নাথ ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হলো রথযাত্রার নির্ঘন্ট। আজ শুকতাবার প্রকাশ করা হলো পুজোর সমস্ত রকমের সময়সূচি।
৬২৬ বছরে পড়লো বিখ্যাত মাহেশের রথযাত্রা। জানাজায় সাধক ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী এই রথযাত্রার সূচনা করেছিলেন। স্বপ্নাদেশ পেয়ে গঙ্গায় ভেসে আসা কাঠ দিয়ে তৈরী করা হয়েছিল জগন্নাথ দেবকে। সেই থেকেই চলে আসছে প্রাচীন বাংলার এতিহ্যবাহী রথযাত্রা।
এবছর কর্তৃপক্ষ সরাসরি পুজোর পাশাপাশি চালু করেছে নালিন ব্যবস্থা। অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে এই বছর পুজোর জন্য কেউ অর্থ দিতে চাইলে তাও দিতে পারবেন অনালাইনে। তাদের ভোগ কুরিয়ার করে পাঠানো হবে বাড়িতে।
প্রসঙ্গত, বাংলা সাহিত্যে মাহেশের রথের উল্লেখ গুনে শেষ করা যাবে না। বস্তুত কাছে দূরের অনেকের কাছে আজ মাহেশের ভৌগোলিক অবস্থানের ধারণা স্পষ্ট না হলেও এক সময় জগন্নাথদেবের মন্দির ও তার স্নানযাত্রা, রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে মাহেশ অবিভক্ত বাংলায় যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল। এক সময় ভ্রাম্যমান থানা ও আদালত গঠিত হত মেলা উপলক্ষে। এমনকী রথযাত্রায় হাওড়া-ব্যান্ডেল শাখায় বিশেষ ট্রেন চালানো হত কিছু দিন আগেও।
অতীতের সে রমরমা না থাকলেও মাহেশের রথের মেলা আজও বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় মেলা। এখনও লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হয় রথযাত্রা উপলক্ষে। হুগলি জেলার শ্রীরামপুর ও রিষড়ার মাঝামাঝি জিটি রোডের ওপর মাহেশের অবস্থান। গঙ্গার এ পারের শেওড়াফুলি, শ্রীরামপুর, রিষড়া, হিন্দমোটর এবং ও পারের টিটাগড়, ব্যারাকপুর, খড়দহ, শ্যামনগর প্রভৃতি অঞ্চলের বাঙালিদের সঙ্গে অবাঙালিদের অংশগ্রহণ বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
মাহেশের রথযাত্রা কত পুরনো তা ঠিক ভাবে বলা যায় না। বিভিন্ন তথ্য প্রমাণাদি থেকে দেখা যায় শ্রীচৈতন্যের অন্যতম পার্ষদ কমলাকর পিপলাই ১৫৩৩ সালে মাহেশে জগন্নাথ দেবের প্রথম সেবায়েত নিযুক্ত হন এবং সেই সময়ের কিছু আগে পরে জগন্নাথ মন্দিরের প্রতিষ্ঠা। যদিও মন্দিরের বর্তমান সেবায়েতের দাবি মাহেশের রথযাত্রা ১৩৯৭ সাল থেকে শুরু। ১৭৯৩ সাল থেকে অনেকগুলি কাঠের রথ তৈরি হলেও ১৮৮৫ সালে মার্টিন-বার্ন কোম্পানির কারিগরি সহায়তায় ১২টি লোহার চাকাবিশিষ্ট সম্পূর্ণ লোহার কাঠামোর ৫০ ফুট উঁচু ১২৫ টন ওজনের রথটি তৈরি হয়, যা আজও বর্তমান। রথটি বাংলার নবরত্ন মন্দিরের আদলে তৈরি।