BigNews: পর পর ৪ টি বিস্ফোরণ, তালিবান দখলের পরেও অশান্ত আফগানিস্তান, ভয়াবহ হামলায় নিহত ৩১,

আফগানিস্তানে পৃথক চারটি বিস্ফোরণে গতকাল বৃহস্পতিবার অন্তত ৩১ জন নিহত এবং ৮৭ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রুপ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটেছে মাজার-ই-শরিফের একটি শিয়া মসজিদে। এই হামলায় দূরনিয়ন্ত্রিত ‘বুবি-ট্র্যাপড ব্যাগ’ ব্যবহার করা হয়েছে। আইএস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যখন হামলা চালানো হয়, তখন মসজিদটি শিয়া মুসল্লি দিয়ে পূর্ণ ছিল। আইএসের একজন সাবেক নেতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতেই এই হামলা চালানো হয়েছে।

আজকের পত্রিকা অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন
দ্বিতীয় হামলাটি ঘটেছে কুন্দুজের একটি পুলিশ স্টেশনের কাছে। এ হামলায় একটি গাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ি বিস্ফোরণে চারজন নিহত এবং ১৮ জন আহত হয়েছেন।

তৃতীয় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে দেশটির পূর্ব নাঙ্গারহার প্রদেশে তালেবানদের একটি গাড়িতে। এতে চার তালেবান সদস্য নিহত এবং একজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া চতুর্থ বিস্ফোরণ ঘটেছে রাজধানী কাবুলের নিয়াজ বেইক এলাকায়। এ এলাকায় একটি মাইন বিস্ফোরণে দুই শিশু আহত হয়েছে।

মাত্র দুই দিন আগে কাবুলের শিয়া অধ্যুষিত এলাকার আব্দুল রহিম শহীদ উচ্চ বিদ্যালয়ে দুটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল এবং ছয়জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছিল। মঙ্গলবারের এই বিস্ফোরণের পর বৃহস্পতিবার আবার ভয়াবহ হামলার খবর পাওয়া গেল।

এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে প্রাদেশিক জনস্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র আহমেদ জিয়া জিন্দানি বলেছেন, ‘আইএসের হামলার পর সর্বত্র রক্ত আর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অসংখ্য মানুষ তাঁদের স্বজনদের খুঁজতে স্থানীয় হাসপাতালে ভিড় করছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মাজার-ই-শরিফের শেহ দোকান নামের মসজিদটিতে মুসল্লিরা নামাজ পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। মসজিদটিতে বেশির ভাগ হাজারা সম্প্রদায়ের মুসলমান নামাজ পড়েন। আফগানিস্তানে হাজারা সম্প্রদায়েরে মুসলমানেরা প্রায়ই আইএস গোষ্ঠীর হামলার শিকার হয়।

মাজার-ই-শরিফের একজন নারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তিনি কাছাকাছি একটি বাজারে কেনাকাটা করছিলেন, তখন হঠাৎ মসজিদের কাছে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই নারী বলেন, ‘বিস্ফোরণে মসজিদের কাচ ভেঙে গেছে। ভয় ও আতঙ্কে সবাই ছোটাছুটি করছিল।’

বিবিসি জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব হামলার বেশ কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এসব ছবির সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে বিবিসির পক্ষে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে আফগানিস্তানের মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র‍্যাপোর্টার রিচার্ড বেনেট এই হামলার নিন্দা করেছেন। তিনি এক টুইটার পোস্টে লিখেছেন, ‘আজ আবারও বিস্ফোরণে আফগানিস্তান কাঁপছে…এবং আবারও হাজারা সম্প্রদায় হামলার শিকার।’ অবিলম্বে এসব হামলার তদন্ত, জবাবদিহি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অবসান ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy