‘ভিত্তিহীন যুক্তি দেবেন না’, আখলাক খুনের আসামিদের বাঁচাতে গিয়ে আদালতের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে সরকার!

২০১৫ সালে গোমাংস রাখার সন্দেহে মহম্মদ আখলাককে পিটিয়ে হত্যার (Mob Lynching) ঘটনায় এক চাঞ্চল্যকর মোড় এল। এই মামলার ১৮ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চলা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার যে আবেদন করেছিল, তা সাফ খারিজ করে দিল সুরজপুরের জেলা আদালত। আদালতের এই রায়ের ফলে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, অভিযুক্তদের রেহাই দেওয়ার যে চেষ্টা যোগী সরকার করেছিল, তা আপাতত আইনি বাধার মুখে পড়ল।
আদালতের তীব্র ভর্ৎসনা আদালত এই মামলায় সরকারি কৌঁসুলির যুক্তিগুলিকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘তাৎপর্যহীন’ বলে বর্ণনা করেছে। বিচারক স্পষ্ট জানিয়েছেন, মামলা তুলে নেওয়ার মতো কোনো অকাট্য আইনি যুক্তি সরকার পেশ করতে পারেনি। আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে, এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া এবং ট্রায়াল যেমন চলছিল তেমনই চলবে।
১০ বছর আগের সেই কালো রাত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫-তে দাদরির বিসাহড়া গ্রামে উন্মত্ত জনতা আখলাকের বাড়িতে চড়াও হয়। গোমাংস রাখার গুজবে আখলাককে পিটিয়ে মারা হয় এবং তাঁর ২২ বছরের ছেলে দানিশকেও গুরুতর জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়। ঘটনায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হলেও বর্তমানে ১৮ জন জামিনে মুক্ত। এই বছর অক্টোবর মাসে হঠাৎই উত্তরপ্রদেশ সরকার এই মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক দানা বাঁধে।
সাক্ষীদের সুরক্ষার নির্দেশ আখলাক পক্ষের আইনজীবী ইউসুফ সাইফি জানিয়েছেন, আদালত এবার সাক্ষীদের বয়ান নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। যদি প্রয়োজন হয়, তবে পুলিশ কমিশনারকে সাক্ষীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ারও আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাত বলেছেন, “যোগী সরকার ন্যায়বিচারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আদালতের এই সিদ্ধান্ত দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা বাড়াল।”