ভুলবেন না এই সাবধানতা! ছাপরার অম্বিকা কলোনিতে এক রাতেই শেষ একটা সাজানো পরিবার, নেপথ্যে মারাত্মক এক ভুল।

হাড়কাঁপানো শীত থেকে বাঁচতে সামান্য এক অসাবধানতা যে কতটা ভয়ানক হতে পারে, তার প্রমাণ মিলল বিহারের ছাপরায়। শুক্রবার রাতে ভগবান বাজার থানার অম্বিকা কলোনিতে ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে ঘরে আগুন জ্বালিয়ে ঘুমিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু সেই আগুনের ধোঁয়াই ঘরে থাকা সাত সদস্যের জন্য মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়ালো। অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হলো তিন শিশু ও এক বৃদ্ধার।

নীরব ঘাতক কার্বন মনোক্সাইড পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অম্বিকা কলোনির ওই পরিবারটি তীব্র শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ করে ভিতরে আগুন জ্বালিয়েছিল। গভীর রাতে ঘরটি ধোঁয়ায় ভরে যায় এবং অক্সিজেনের মাত্রা শূন্যে নেমে আসে। কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়ায় ঘুমের মধ্যেই অচৈতন্য হয়ে পড়েন সকলে। শনিবার সকালে দীর্ঘক্ষণ দরজা না খোলায় প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয় এবং দরজা ভেঙে দেখা যায় সাতজনই সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে আছেন।

মৃত ও আহতদের তালিকা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তিন নাবালক শিশু—তেজস, গুড়িয়া ও আর্যকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য কমলাবতী দেবীও চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান। বাকি তিনজনের অবস্থাও অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তাঁদের কড়া পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকরা।

বিহার জুড়ে শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা বর্তমানে সমগ্র বিহার ঘন কুয়াশা ও তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কবলে। পাটনা, মুজফফরপুরসহ একাধিক জেলায় সূর্যের দেখা মিলছে না। আবহাওয়া দপ্তর থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে যে, রাতে কুয়াশার দাপট আরও বাড়বে। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের পরামর্শ—বন্ধ ঘরে কখনই কয়লা বা কাঠের আগুন (অগ্নিকুণ্ড) জ্বালিয়ে ঘুমাবেন না। বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা না থাকলে এই ধোঁয়া প্রাণঘাতী হতে পারে। ছাপরার এই ঘটনা বিহারবাসীকে এক চরম সতর্কবার্তা দিয়ে গেল।