‘হিন্দুদের জন্য নরক বাংলাদেশ!’ অমৃত মণ্ডল হত্যাকাণ্ডে রাষ্ট্রপুঞ্জের হস্তক্ষেপ চাইল ভিএইচপি

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। একদিকে দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, অন্যদিকে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর ‘অকথ্য’ নির্যাতন ও ‘মব লিঞ্চিং’ থামার কোনো লক্ষণ নেই। রাজবাড়ির পাংশায় অমৃত মণ্ডল ওরফে সম্রাট নামে এক হিন্দু যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের উত্তাল ওপার বাংলা। অভিযোগ উঠছে, ঠিক যেভাবে কিছুদিন আগে দীপু দাসকে কট্টরপন্থীরা নৃশংসভাবে খুন করেছিল, সেই একই ছকে প্রাণ গেল অমৃতের।
এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে পড়ে শেষমেশ মুখ খুলেছে মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। এক বিবৃতিতে প্রশাসন দাবি করেছে, এটি কোনো সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। পুলিশের দাবি অনুযায়ী, নিহত অমৃত মণ্ডল ওরফে সম্রাট একজন ‘শীর্ষ পর্যায়ের অপরাধী’ এবং তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও খুনের একাধিক মামলা ছিল। এলাকার মানুষের ‘গণরোষে’র শিকার হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি সরকারের। তবে সরকারের এই ‘অপরাধী’ তকমা দিয়ে দায় ঝাড়ার কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
ঠিক এই উত্তপ্ত আবহে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (VHP)। ভিএইচপি নেতা বিনোদ বনসাল প্রকাশ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, “বাংলাদেশে যা চলছে তা কেবল একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, এটি বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক চরম উদাহরণ।” আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলির নীরবতা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এখন সব নজর তারেক রহমানের দিকে। আজ তিনি বগুড়া-৬ আসনে নিজের ভোটার কার্ড সংগ্রহ করবেন এবং তাঁর বাবা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন। আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। কট্টরপন্থী জামাত-ই-ইসলামি কিংবা ছাত্রদের নতুন দল এনসিপি-র তুলনায় বিএনপি অনেক বেশি পরীক্ষিত শক্তি। তবে ভোটের আগে হিন্দুদের ওপর এই লাগাতার হামলা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি বিএনপি তথা আগামীর নির্বাচিত সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে।