“অকথ্য নির্যাতন করছে ইউনূস…”-বাংলাদেশে হিন্দু নিধন নিয়ে মুখ খুললেন হাসিনা

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকেই উত্তাল পরিস্থিতি। এবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে সরাসরি ‘ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অকথ্য নির্যাতনে’র অভিযোগ তুললেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লিগ নেত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের বর্তমান অরাজকতা নিয়ে সরব হন তিনি। তাঁর দাবি, বর্তমান শাসনে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা তলানিতে ঠেকেছে এবং দেশজুড়ে এক ভয়াবহ ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
শেখ হাসিনা নিজের বক্তব্যে সাম্প্রতিককালে হিন্দু যুবক দীপু দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে আনেন। নাম না করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পুড়িয়ে মারার মতো ভয়াবহ নজির স্থাপিত হচ্ছে, যা নজিরবিহীন। তিনি অভিযোগ করেন, ইউনূস সরকার সব ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ। বরং নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।
আওয়ামী লিগ নেত্রীর কথায়, “বাংলাদেশে বিশেষ করে অমুসলিমদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হচ্ছে। মানুষ পুড়িয়ে মারার মতো ঘটনা সভ্য সমাজে ভাবা যায় না।” তবে এই পরিস্থিতির অবসান ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। হাসিনা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানান, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এই ‘অন্ধকার সময়’কে খুব বেশিদিন স্থায়ী হতে দেবে না। তারা দ্রুত এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
উল্লেখ্য, জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর হামলার একাধিক খবর সামনে এসেছে। সম্প্রতি দীপু দাসের হত্যাকাণ্ডের পর পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ নেয়। ঢাকার রাজপথে সংখ্যালঘু সংগঠনগুলো দফায় দফায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে এবং সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছে। ঠিক এই আবহে শেখ হাসিনার এই বয়ান বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বক্তব্যের শেষে বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীসহ দেশের আপামর জনতাকে শুভেচ্ছা জানান হাসিনা। তিনি বলেন, “সব খ্রিস্টান ভাই-বোনদের সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করি। আশা করি অন্ধকার কেটে গিয়ে শীঘ্রই আলোর দেখা মিলবে।” বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জামাত ও এনসিপি-র মতো দলগুলোর উত্থান এবং তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের রাজনীতিকে কোন দিকে নিয়ে যায়, এখন সেটাই দেখার।