“সব ধর্মকে নিয়ে নিরাপদ বাংলাদেশ”-অস্থির সময়ে যে প্রতিশ্রুতি দিলেন তারেক

দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষার অবসান। অবশেষে বৃহস্পতিবার জন্মভূমির মাটিতে পা রাখলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আর দেশে ফিরেই এক ‘নিরাপদ ও নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার ডাক দিলেন তিনি। ঢাকার জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে নিজের ভিশন স্পষ্ট করতে গিয়ে মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের বিখ্যাত উক্তির আদলে তারেক বলেন, ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’ (আমার একটি পরিকল্পনা আছে)। দেশ গঠনের এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি দেশের প্রতিটি মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগপ্রবণ তারেক রহমান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সাথে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের তুলনা করেন। তিনি বলেন, “৭১-এ মানুষ যেমন স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, ২০২৪ সালেও দেশের মানুষ সার্বভৌমত্ব রক্ষায় একাট্টা হয়েছে। আজ দেশের মানুষ কথা বলার অধিকার ও গণতন্ত্র ফিরে পেতে চায়।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, ২০২৪-এর শহিদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে একটি প্রত্যাশিত ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলা আমাদের পরম কর্তব্য।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ওপর বিশেষ জোর দিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, “এ দেশে পাহাড়ের মানুষ হোক বা সমতলের, মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান আমরা সবাই এক। আমরা এমন এক নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে একজন নারী বা শিশু নিশ্চিন্তে বাড়ি থেকে বের হবে এবং নিরাপদে ফিরে আসবে।” শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনকালের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিগত দেড় দশকে এ দেশে কেউ প্রাণ খুলে কথা বলতে পারেনি, কিন্তু সেই দিন এখন শেষ।

তারেক রহমান তাঁর বক্তব্যে তরুণ প্রজন্মকে আগামীর কারিগর হিসেবে অভিহিত করেন এবং একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পরপর তিনবার ‘আমরা শান্তি চাই’ বলে তিনি সমর্থকদের উগ্রতা পরিহার করে দেশ গড়ায় মনোনিবেশ করার নির্দেশ দেন। দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে তাঁর এই প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন সমীকরণ তৈরি করল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।