সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ‘দুধ-সোডা’ কি আদেও স্বাস্থ্যকর? এর আসল সত্যিটা জানলে চমকে যাবেন!

‘ডার্লিং, ডার্লিং, তুমি আমার হৃদয় কেন ভেঙে দিলে…’— রণবীর সিং অভিনীত ‘ধুরন্ধর’ সিনেমার এই সংলাপটি এখন নেটপাড়ায় মুখে মুখে ফিরছে। সিনেমার জনপ্রিয়তার পাশাপাশি সেখানে দেখানো একটি বিশেষ পানীয়, ‘দুধ-সোডা’ নিয়ে এখন ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন এটি পেট পরিষ্কার রাখে, আবার কেউ বলছেন শীতকালে এটি মহৌষধ। কিন্তু এই তথাকথিত ‘এনার্জি ড্রিঙ্ক’ কি আদেও শরীরের জন্য ভালো?

কীভাবে তৈরি হয় এই পানীয়? দুধ-সোডা সাধারণত ঠান্ডা বা হালকা গরম দুধের সাথে চিনি, কার্বনেটেড সোডা এবং ফ্লেভারের জন্য গোলাপ জল বা জাফরান মিশিয়ে তৈরি করা হয়। অনেকে আবার স্বাদের জন্য এতে কোক, স্প্রাইট বা লিমকাও যোগ করেন। কিন্তু বিজ্ঞানের ভাষায়, দুধের সাথে সোডার এই মিলন আদতে কতটা স্বাস্থ্যসম্মত?

বিশেষজ্ঞের সতর্কতা: গঙ্গা রাম হাসপাতালের সিনিয়র ডায়েটিশিয়ান ফারেহা শানাম TV9 ভারতবর্ষকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে, সোডা একটি উচ্চ অ্যাসিডিক পদার্থ। দুধের সাথে এটি মেশানো হলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। বিশেষ করে যদি এতে বাজারজাত কোল্ড ড্রিঙ্কস মেশানো হয়, তবে তার রাসায়নিক এবং অতিরিক্ত চিনি বিপাক প্রক্রিয়ায় মারাত্মক প্রভাব ফেলে।

দুধ-সোডা পানের মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

  • পেটের সমস্যা: নিয়মিত এটি পান করলে গ্যাস, অ্যাসিডিটি এবং দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি এর অ্যাসিডিক বিক্রিয়ায় আলসার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

  • ডায়াবেটিস ও স্থূলতা: অতিরিক্ত চিনি ও কার্বনেটেড পানীয়র মিশ্রণ রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং দ্রুত ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

  • হাড়ের ক্ষতি: সোডায় থাকা ফসফরিক অ্যাসিড হাড়ের ক্যালসিয়াম শুষে নেয়, ফলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে।

  • শিশুদের জন্য ঝুঁকি: ক্রমবর্ধমান শিশুদের পরিপাকতন্ত্র এবং হাড়ের গঠনের জন্য এই পানীয় অত্যন্ত ক্ষতিকর।

পরিশেষে, ‘ধুরন্ধর’ সিনেমার স্টাইলে দুধ-সোডা খাওয়া হয়তো আপনার শখ হতে পারে, কিন্তু প্রতিদিনের অভ্যাসে এটি রাখা মানেই নিজের বিপদ ডেকে আনা। সুস্থ থাকতে প্রাকৃতিক ও টাটকা পানীয়র ওপর ভরসা রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।