অরুণাচলই কি পরবর্তী লক্ষ্য? মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের চাঞ্চল্যকর তথ্যে ঘুম উড়ল ভারতের, সীমান্তে ফের আশঙ্কার মেঘ।

পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC) থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর যখন সীমান্তে শান্তির আশা উঁকি দিচ্ছে, ঠিক তখনই আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগ (Pentagon) এক নতুন বিপদের সংকেত দিল। মার্কিন কংগ্রেসকে দেওয়া এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, চীন এখন অরুণাচল প্রদেশকে তাইওয়ানের মতোই তাদের ‘মূল স্বার্থ’ বা ‘কোর ইন্টারেস্ট’-এর অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর অর্থ হলো, বেইজিং এখন অরুণাচল নিয়ে কোনো সমঝোতা করতে রাজি নয় এবং তারা সামরিক উপায়েও এই অঞ্চল দখলে মরিয়া হতে পারে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, চীন ২০৪৯ সালের মধ্যে ‘মহা পুনরুত্থান’ (Great Rejuvenation)-এর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। এই পরিকল্পনার আওতায় অরুণাচল প্রদেশ, তাইওয়ান এবং দক্ষিণ চীন সাগরকে সম্পূর্ণভাবে নিজের অধীনে আনতে চায় বেইজিং। তাদের লক্ষ্য হলো ২০৪৯ সালের মধ্যে এমন এক ‘বিশ্বমানের সেনাবাহিনী’ গড়ে তোলা, যারা পৃথিবীর যেকোনো কোণে যুদ্ধ জয় করতে সক্ষম হবে। চীন শুরু থেকেই ব্রিটিশদের তৈরি ‘ম্যাকমোহন লাইন’ প্রত্যাখ্যান করে অরুণাচলকে ‘দক্ষিণ তিব্বত’ বলে দাবি করে আসছে। তবে আগে তাদের নজর কেবল তাওয়াংয়ের ওপর থাকলেও, বর্তমানে তারা গোটা রাজ্যকেই বিতর্কিত ঘোষণা করেছে।

সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা এই উত্তেজনাকে আরও উসকে দিয়েছে। গত মাসে লন্ডন থেকে জাপান যাওয়ার পথে অরুণাচলের বাসিন্দা প্রেমা থংডককে সাংহাই বিমানবন্দরে ১৮ ঘণ্টা আটকে রাখে চীন। তাদের দাবি ছিল, পাসপোর্টে জন্মস্থান হিসেবে ‘অরুণাচল’ লেখা থাকা মানেই তা অমান্য। এছাড়া অরুণাচলকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলায় এক ইউটিউবারকেও চীনে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। প্রাক্তন কূটনীতিক মহেশ সচদেব জানিয়েছেন, এই প্রথম আমেরিকা লাদাখের পরিবর্তে অরুণাচল নিয়ে চীনের আগ্রাসী মনোভাবের কথা স্পষ্টভাবে তুলে ধরল। ভারত সরকার অবশ্য বেইজিংকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য এবং অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে এবং থাকবে।