কুমায়ুন ভ্রমণে এই গির্জা না দেখলে সফর অসম্পূর্ণ! জানুন ব্রিটিশ যুগের এই স্থাপত্যের মাহাত্ম্য।

উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ি শহর আলমোড়ার ঐতিহ্যে এক অনন্য নাম ‘বুদান মেমোরিয়াল মেথোডিস্ট চার্চ’। ১৮৯৭ সালে নির্মিত এই গির্জাটি কেবল একটি ধর্মীয় উপাসনালয় নয়, বরং ব্রিটিশ আমলের স্থাপত্য ও সমাজসেবার এক জীবন্ত দলিল। হিমালয়ের কোলে শান্ত পরিবেশে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক গির্জাটি পর্যটক ও বিশ্বাসীদের কাছে আজও ভক্তি ও শান্তির এক পরম গন্তব্য।
কার স্মৃতিতে এই গির্জা? এই গির্জাটি লন্ডন মিশনারি সোসাইটির প্রখ্যাত ধর্মপ্রচারক জন হেনরি বুডেনের (১৮৬২-১৮৯০) স্মরণে উৎসর্গ করা হয়েছে। কুমায়ুন অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তার এবং সমাজসেবায় তাঁর অবদান ছিল অপরিসীম। ১৮৯০ সালে তাঁর অকাল মৃত্যুর পর, ১৮৯৭ সালের ২রা মার্চ তাঁর সম্মানে এই গির্জাটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়।
স্থাপত্যের অনন্য শৈলী: বুদান মেমোরিয়াল চার্চের স্থাপত্যে রোমানেস্ক এবং গথিক শৈলীর এক অপূর্ব মেলবন্ধন দেখা যায়। স্থানীয় পাহাড়ের মজবুত পাথর দিয়ে নির্মিত এই গির্জার উঁচু খিলান, সূঁচালো চূড়া এবং রঙিন কাঁচের জানালা প্রাচীন ব্রিটিশ আমলের গাম্ভীর্য ফুটিয়ে তোলে। গির্জার ভেতরে ৩০০ জন মানুষের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। এখানকার ১৮ শতকের পুরনো ঘড়িটি আজও দর্শকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
বড়দিনের আলোকসজ্জা ও সম্প্রীতি: বড়দিন বা ক্রিসমাস উপলক্ষে বর্তমানে এই গির্জাটি মায়াবী আলোয় সেজে উঠেছে। পাহাড়ের নিস্তব্ধ অন্ধকারে আলোকোজ্জ্বল এই গির্জা এক স্বর্গীয় পরিবেশ তৈরি করে। তবে এই উৎসব কেবল খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না; আলমোড়ার সমস্ত ধর্মের মানুষ এখানে মোমবাতি জ্বালাতে এবং ভ্রাতৃত্বের বার্তা ভাগ করে নিতে আসেন। এটি কুমায়ুন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐক্য ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ।
আলমোড়া শহর এবং সংলগ্ন পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য উপভোগের পাশাপাশি আধ্যাত্মিক প্রশান্তি খুঁজতে পর্যটকরা বারবার এই ঐতিহাসিক চার্চে ফিরে আসেন।