চীন-পাক সীমান্তে ভারতের ‘ব্রহ্মাস্ত্র’! ২০০ কিমি পাল্লার নয়া অস্ত্রে কাঁপবে শত্রুপক্ষ

আকাশে নিজেদের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে এবং শত্রু দেশের যুদ্ধবিমানকে নিমেষেই ধ্বংস করতে এবার এক অভাবনীয় শক্তির অধিকারী হতে চলেছে ভারতীয় বায়ুসেনা (IAF)। প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO) ভারতের নিজস্ব আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ‘অ্যাস্ট্রা মার্ক-২’-এর ক্ষমতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা ১৬০ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে প্রায় ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। যদি এটি বাস্তবায়িত হয়, তবে এটি হবে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ‘বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ’ (BVR) মিসাইল।
ডুয়াল-পালস রকেট মোটরের জাদু ডিআরডিও-র বিজ্ঞানীরা অ্যাস্ট্রা মার্ক-২ ক্ষেপণাস্ত্রটিতে একটি আপগ্রেডেড ‘ডুয়াল-পালস রকেট মোটর’ ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছেন। এই প্রযুক্তির বিশেষত্ব হলো, এটি ক্ষেপণাস্ত্রটিকে দীর্ঘ সময় ধরে থ্রাস্ট বা শক্তি প্রদান করতে সক্ষম। দ্বিতীয় পালসের ‘বার্ন-টাইম’ বাড়িয়ে দেওয়ার ফলে ক্ষেপণাস্ত্রটি তার যাত্রাপথের শেষ পর্যায়েও প্রচণ্ড গতি ও শক্তি বজায় রাখবে। এর ফলে অনেক দূর থেকেও অত্যন্ত ক্ষিপ্র শত্রু বিমানকে সহজেই লক্ষ্যবস্তু করতে পারবে ভারত।
২০২৬-এ চূড়ান্ত পরীক্ষা ও বিপুল অর্ডার রিপোর্ট অনুযায়ী, এই উন্নত সংস্করণের ফ্লাইট ট্রায়াল বা উড়ান পরীক্ষা ২০২৬ সালের শুরুতেই অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষায় সাফল্য মিললে ওই বছরের মাঝামাঝি থেকেই এর বাণিজ্যিক উৎপাদন বা সিরিয়াল প্রোডাকশন শুরু হয়ে যেতে পারে। ভারতীয় বায়ুসেনা এই ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে, তারা ইতিমধ্যে প্রায় ৭০০টি অ্যাস্ট্রা মার্ক-২ ক্ষেপণাস্ত্রের একটি বড় অর্ডার দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এর ফলে ইউরোপীয় ‘মিটিওর’ ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর ভারতের নির্ভরতা অনেকটাই কমে যাবে।
ভারতের সামরিক শক্তিতে নতুন মোড় এই আপগ্রেডেশনের ফলে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলো শত্রুপক্ষের বিমান তাদের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার আগেই সেগুলোকে অনেক দূর থেকে ধ্বংস করে দিতে পারবে। এটি ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও দুর্ভেদ্য করে তুলবে। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই ক্ষেপণাস্ত্র কেবল খরচই কমাবে না, বরং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের ‘স্বনির্ভর’ হওয়ার স্বপ্নকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। পুরনো মডেলের ক্ষেপণাস্ত্রগুলোতেও এই নতুন প্রযুক্তি যুক্ত করে সেগুলোর পাল্লা বাড়ানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।