ভোটার তালিকায় ওবিসি শংসাপত্র কি বৈধ? হাই কোর্টের নির্দেশে চাপে জাতীয় নির্বাচন কমিশন!

২০১০ সালের পর ইস্যু করা ওবিসি শংসাপত্র বা ওবিসি সার্টিফিকেট নিয়ে দীর্ঘদিনের আইনি লড়াই এবার এক নতুন মোড় নিল। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে বাতিল হওয়া এই শংসাপত্রগুলি ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা যাবে কি না, তা নিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিল আদালত। আগামী ৭ দিনের মধ্যে কমিশনকে স্পষ্ট জানাতে হবে তাদের অবস্থান।

আদালতের কড়া অবস্থান বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের এজলাসে বুধবার এই মামলার শুনানি হয়। মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, হাই কোর্ট আগেই ২০১০ সালের মার্চ মাসের পরবর্তী সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র বাতিল ঘোষণা করেছে এবং সেগুলির ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। তা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে এই শংসাপত্রগুলিকে অন্যতম প্রামাণ্য নথি হিসেবে গ্রহণ করছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই আদালত জানিয়েছে, বিষয়টি পুরোপুরি কমিশনের এক্তিয়ারভুক্ত এবং তাদেরই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

আইনি মারপ্যাঁচ ও বর্তমান পরিস্থিতি গত বছরের ২২ মে কলকাতা হাই কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে ২০১০ সালের পরবর্তী ওবিসি শংসাপত্রগুলি বাতিল করে দেয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, এই শংসাপত্রগুলি ভবিষ্যতে কোনো সুযোগ-সুবিধা বা নথি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত এসআইআর সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে ১৩টি গ্রহণযোগ্য নথির তালিকায় ওবিসি সার্টিফিকেটের নাম দেখে ফের মামলা দায়ের করা হয়। মামলাকারী আইনজীবীদের দাবি, আদালতের অবমাননা করে এই বাতিল নথি ব্যবহার করা হচ্ছে।

কমিশনের পরবর্তী পদক্ষেপ কী? ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসআইআর-এর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে এবং আগামী ২৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে নথি যাচাইয়ের কাজ। এই পরিস্থিতিতে কমিশনের হাতে সময় অত্যন্ত কম। বিজেপি শিবিরের পক্ষ থেকেও এই বাতিল শংসাপত্র ব্যবহার বন্ধের জোরালো দাবি তোলা হয়েছে। এখন দেখার, হাই কোর্টের বেঁধে দেওয়া ৭ দিনের সময়সীমার মধ্যে জাতীয় নির্বাচন কমিশন তাদের নথি তালিকা থেকে ওবিসি শংসাপত্র বাদ দেয় কি না। কমিশনের এই সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করছে লক্ষ লক্ষ ভোটারের নথির বৈধতা।