২৫ বছরের অপেক্ষা শেষ! জলকামানে স্বাগত জানাল ইন্ডিগোকে, নবি মুম্বই বিমানবন্দরে শুরু উড়ান চলাচল

মুম্বইবাসীর দীর্ঘ ২৫ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে বাণিজ্যিকভাবে ডানা মেলল নবি মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (NMIA)। এদিন সকালে বেঙ্গালুরু থেকে আসা ইন্ডিগোর একটি বিমান অবতরণের মধ্য দিয়ে শুরু হলো এক নতুন ইতিহাস। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পর বাণিজ্য নগরী মুম্বই পেল তার দ্বিতীয় বিমানবন্দর।

জলকামানে রাজকীয় অভ্যর্থনা সকাল ৮টায় বেঙ্গালুরু থেকে আসা ইন্ডিগোর 6E460 বিমানটি রানওয়ে স্পর্শ করতেই সেটিকে ঐতিহ্যবাহী ‘ওয়াটার ক্যানন স্যালুট’ বা জলকামান দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। এর ঠিক ৪০ মিনিট পরেই হায়দরাবাদের উদ্দেশ্যে প্রথম উড্ডয়নটি সম্পন্ন হয়। আদানি গোষ্ঠী পরিচালিত এই বিমানবন্দরটি চালুর ফলে মুম্বই এখন বিশ্বের সেই বাছাই করা শহরগুলোর তালিকায় নাম লেখালো, যেখানে মাল্টি-এয়ারপোর্ট সিস্টেম কার্যকর রয়েছে।

প্রকল্পের ইতিহাস ও নির্মাণ ১৯৯৭ সালে প্রথম এই গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দরের পরিকল্পনা করেছিল সিডকো (CIDCO)। জমি অধিগ্রহণ ও পরিবেশগত ছাড়পত্রের জটিলতায় দীর্ঘ সময় থমকে থাকার পর ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এর শিলান্যাস করেন। ২০২১ সাল থেকে আদানি এয়ারপোর্টস হোল্ডিংস লিমিটেড এর নির্মাণের দায়িত্ব নেয় এবং রেকর্ড সময়ে কাজ শেষ করে বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু করল।

নজরে বিমানবন্দরের বিশেষত্ব:

বাজেট: প্রথম পর্যায়ে প্রায় ১৯ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

ধারণক্ষমতা: বর্তমানে বার্ষিক ২ কোটি যাত্রী সামলানোর ক্ষমতা থাকলেও, ২০৩২ সালের মধ্যে এটি বছরে ৯ কোটি যাত্রী সামলাতে পারবে।

স্থাপত্য: ভারতের জাতীয় ফুল পদ্ম বা ‘লোটাস’ থিমে সাজানো হয়েছে আধুনিক টার্মিনালটি।

প্রযুক্তি: প্রথম দিন থেকেই এখানে পেপারলেস ও কন্ট্যাক্টলেস ‘ডিজি-যাত্রা’ (Digi-Yatra) পরিষেবা চালু করা হয়েছে।

উড়ানের সময়সূচী ও রুট প্রাথমিকভাবে ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস, আকাসা এয়ার ও স্টার এয়ার— এই চার সংস্থা দেশের ৯টি শহরের সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে। বর্তমানে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা বিমানবন্দরটি খোলা থাকবে। আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে এটি ২৪ ঘণ্টা পরিষেবার জন্য প্রস্তুত হবে বলে জানানো হয়েছে। এই নতুন বিমানবন্দরটি চালুর ফলে পুরনো বিমানবন্দরের উপর যাত্রীদের চাপ অনেকটাই কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।