বিমানের চেয়েও বেশি আয় স্টেশনে? ভারতের ৭০০০ স্টেশনে খুলছে নামী রেস্তোরাঁ চেইন, জানুন বিশদ।

রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে ট্রেনের অপেক্ষা করার সময় এখন আর শুধু সাধারণ চা-বিস্কুটেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে না যাত্রীদের। ভারতীয় রেলের ভোলবদল করতে এবার ময়দানে নামছে বিশ্বের নামী সব ফুড চেইন। কেন্দ্রীয় সরকারের সবুজ সংকেত পাওয়ার পর ম্যাকডোনাল্ডস, কেএফসি, হালদিরামস এবং ওয়াও মোমো-র মতো প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডগুলো এখন রেলওয়ে স্টেশনে তাদের আউটলেট খোলার তোড়জোড় শুরু করেছে।

২০২৬-এই শুরু হচ্ছে নতুন পরিষেবা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতে, ২০২৬ সালের মধ্যেই এই ধরণের প্রথম প্রিমিয়াম আউটলেটগুলো চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত মাসে ২০১৭ সালের ক্যাটারিং নীতি সংশোধন করে এই বড় ব্র্যান্ডগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। লক্ষ্য একটাই—রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের বিমানবন্দরের মতো আধুনিক ও উন্নত পরিষেবা প্রদান করা।

লাইসেন্স ও ই-নিলাম প্রক্রিয়া সরকার জানিয়েছে, ভারতের ৭,০০০-এরও বেশি স্টেশনে এই রেস্তোরাঁ চেইনগুলোকে পাঁচ বছরের জন্য লাইসেন্স দেওয়া হবে। এর জন্য স্বচ্ছ ই-নিলাম প্রক্রিয়া চালানো হবে। ব্র্যান্ডগুলো চাইলে সরাসরি কোম্পানির মালিকানাধীন স্টোর বা ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেলের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা চালাতে পারবে। ন্যাশনাল রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (NRAI)-এর সভাপতি সাগর দারিয়ানি জানান, বিমানবন্দরে অর্ডারের মূল্য বেশি হলেও, রেলওয়ে স্টেশনে গ্রাহকের সংখ্যা বিপুল, যা ব্যবসার জন্য এক অভাবনীয় সুযোগ।

রেলওয়ের লক্ষ্মীলাভ বর্তমানে ভারতীয় রেলের মোট আয়ের মাত্র ৩ শতাংশ আসে ভাড়া বহির্ভূত উৎস থেকে। অথচ উন্নত দেশগুলোতে এই আয় প্রায় ৩০ শতাংশ। এনআইটিআই (NITI) আয়োগের মতে, প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডগুলো স্টেশনে এলে রেলের আয় এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যাবে। ২০২৫ অর্থবর্ষে রেলের ভাড়া-বহির্ভূত রাজস্ব ছিল ৬৮৬.৯ কোটি টাকা, যা এই নতুন নীতির ফলে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যাত্রীদের জন্য বিশেষ সুবিধা শুধুমাত্র খাবার নয়, কফি, জুস এবং বিভিন্ন কোমল পানীয়ের চাহিদাও স্টেশনে বিমানবন্দরের মতোই থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এই সব রেস্তোরাঁকে খাবারের গুণমান এবং পরিষেবার ক্ষেত্রে কড়া নিয়ম মেনে চলতে হবে। এর ফলে সব বয়সের এবং সব স্তরের মানুষ ভ্রমণের সময় উন্নত মানের স্বাস্থ্যকর খাবার পাবেন।