মাদার ডেয়ারি অতীত, রাজ্যে আসছে ১৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র; ভোটের আগে বড় মাস্টারস্ট্রোক নবান্নের!

২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের রণদামামা বাজার আগেই শিল্প ও কর্মসংস্থানে বড়সড় চমক দিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর একগুচ্ছ বড় প্রকল্পের অনুমোদন দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে শুরু করে লজিস্টিক হাব এবং আবাসন—একাধিক ক্ষেত্রে প্রায় ২০০ একরেরও বেশি জমি ব্যবহারের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, রাজ্যে বিনিয়োগের গতি বাড়াতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতেই এই দ্রুত সিদ্ধান্ত।
সবচেয়ে বড় চমক এসেছে এককালের রাজনৈতিক তপ্তভূমি সিঙ্গুরকে ঘিরে। নাহার ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেডকে সিঙ্গুরে ১১.৩৫ একর জমি দেওয়া হয়েছে, যেখানে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বিশাল লজিস্টিক ও ওয়্যারহাউসিং হাব তৈরি হবে। ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন এবং ফ্লিপকার্টের মতো সংস্থাগুলি এখান থেকে তাদের কাজ পরিচালনা করবে। টাটাদের চলে যাওয়ার পর সিঙ্গুরে এই মেগা বিনিয়োগ রাজ্যের শিল্প মানচিত্রে নতুন বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
পাশাপাশি, রাজ্যের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে নবান্ন। জেএসডব্লিউ এনার্জি লিমিটেডকে (JSW Energy Limited) পিপিপি মডেলে ১৬০০ মেগাওয়াটের ‘নিউ সুপার ক্রিটিক্যাল থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট’ তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ৮০০ মেগাওয়াট করে দু’টি ইউনিটের মাধ্যমে এই বিপুল বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। প্রকল্পের প্রাথমিক মেয়াদ ২৫ বছর। অন্যদিকে, রাজ্য দুগ্ধ শিল্পেও বড় বদল আনা হয়েছে। ‘মাদার ডেয়ারি ক্যালকাটা’-র আইনি অস্তিত্ব এখন থেকে সম্পূর্ণভাবে মিশে গেল ‘বাংলার ডেয়ারি’-র সঙ্গে।
এছাড়াও জঙ্গল সুন্দরী কর্মনগরীতে ১৫৫ একর এবং বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ৩০ একর সহ বিভিন্ন শিল্পতালুকে জমি বরাদ্দের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। হাওড়ার অঙ্কুরহাটিতে জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্কের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজও দ্রুত শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভোটের আগে এই জমি বিলি ও বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত যে কর্মসংস্থানের হাতিয়ার হতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।