“জঙ্গলের জীবন আর সহ্য হচ্ছিল না”, ইনসাস-এসএলআর ফেলে সমাজের মূল স্রোতে ফিরলেন মহিলা কম্যান্ডাররাও

ওড়িশার মালকানগিরি জেলায় নকশালবাদের অবসান ঘটানোর পথে বড়সড় সাফল্য পেল প্রশাসন। মঙ্গলবার ওড়িশা পুলিশের সামনে আত্মসমর্পণ করলেন ২২ জন সক্রিয় নকশাল ক্যাডার। এদের মধ্যে রয়েছেন দুর্ধর্ষ মহিলা যোদ্ধা, মিলিশিয়া সদস্য এবং এরিয়া কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কমান্ডাররা। আত্মসমর্পণের সময় তাঁদের হাতে ছিল ইনসাস রাইফেল, এসএলআর, দেশি বন্দুক এবং বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ।

মালকানগিরি পুলিশ সুপার নীতিন কুশলকার জানিয়েছেন, পুলিশের ক্রমাগত অভিযান এবং ড্রোন নজরদারির চাপে পড়ে কোণঠাসা হয়েই এই আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত। আত্মসমর্পণকারী এক মহিলা যোদ্ধা জানান, “জঙ্গলে খাবারের অভাব আর অসুখ-বিসুখে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। নেতাদের ওপর আর কোনো ভরসা নেই, আমরা এখন স্বাভাবিক জীবন চাই।” মূলত রাজ্য সরকারের ‘সারেন্ডার অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন পলিসি’-র আওতায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সাহায্য ও পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতিই তাঁদের মূল স্রোতে ফিরতে উৎসাহিত করেছে।

এককালে নকশালদের ‘লিবারেটেড জোন’ হিসেবে পরিচিত মালকানগিরিতে এখন উন্নয়নের ছোঁয়া। রাস্তাঘাট ও স্কুল-হাসপাতাল তৈরি হওয়ায় আদিবাসীদের মধ্যেও নকশালদের সমর্থন কমছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে দেশজুড়ে ৫০০-র বেশি নকশাল আত্মসমর্পণ করেছেন বা নিহত হয়েছেন। ফলে ওড়িশা ও ছত্তিশগড় সীমান্তে নকশালদের দখল করা ‘রেড করিডর’ এখন ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে।