“ধর্ম অবমাননার নেই প্রমাণ”-সহকর্মীদের বিশ্বাসঘাতকতায় মৃত্যু হয় হিন্দু দীপুর, জানালো RAB

বাংলাদেশের ময়মনসিংহের ভালুকায় এক পোশাক কারখানার অভ্যন্তরে হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসকে (২৭) পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি কোনো আকস্মিক জনরোষ নয়, বরং এক সুপরিকল্পিত নৃশংসতা। তদন্তে নেমে র্যাব (RAB) এবং পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ম অবমাননার যে অভিযোগ তুলে দীপুকে হত্যা করা হয়েছে, তার কোনো প্রমাণ মেলেনি।
র্যাব-১৪-এর কমান্ডার নাইমুল হাসান জানিয়েছেন, কারখানার ভেতরেই উত্তেজনার সূত্রপাত। অভিযোগ উঠেছে, পরিস্থিতি শান্ত করার নাম করে কারখানার ফ্লোর ইনচার্জ ও কোয়ালিটি ইনচার্জ দীপুকে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই করান এবং পরে তাঁকে পুলিশের বদলে উন্মত্ত ইসলামপন্থী জনতার হাতে তুলে দেন। রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে উন্মত্ত জনতা কারখানার গেট ভেঙে দীপুকে টেনে বের করে আনে। এরপর চলে অমানবিক অত্যাচার। পিটিয়ে মারার পর তাঁর নিথর দেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ জাতীয় সড়কের ডিভাইডারে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশের দাবি, কারখানা কর্তৃপক্ষ অনেক দেরিতে খবর দিয়েছে। “ঠিক সময়ে একটি ফোন পেলেই প্রাণ বাঁচানো যেত,” জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মহম্মদ ফারহান হোসেন খান। ইতিমধ্যেই ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিন বছরের বিবাহিত জীবন এবং দেড় বছরের একটি সন্তান রেখে যাওয়া দীপুর ভাই অপু দাসের প্রশ্ন, “অপরাধ করলে বিচার হতো, এভাবে কেন মারা হলো?” নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনও এই ঘটনায় সরব হয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আইনের শাসন নিয়ে।