পিটিয়ে খুন, তারপর জীবন্ত দহন! বাংলাদেশে হিন্দু শ্রমিক দীপু দাসের হত্যাকাণ্ডের শিউরে ওঠা ভিডিও ভাইরাল।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের এক নৃশংসতম অধ্যায় সামনে এল ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে। পোশাক শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসের হত্যাকাণ্ডের একটি হাড়হিম করা ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যমুনা টিভির প্রকাশিত সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি কারখানার নীল গেটের বাইরে স্লোগান দিচ্ছে এক উন্মত্ত জনতা। কিছুক্ষণ পরেই ভেতর থেকে গেট খুলে দেওয়া হয় এবং দীপুকে আক্ষরিক অর্থেই হিংস্র জনতার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

অভিযোগ ছিল, দীপু ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। তবে তদন্তকারী সংস্থাগুলো স্পষ্ট জানিয়েছে, দীপুর বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগের কোনো প্রমাণ মেলেনি। লেখিকা তসলিমা নাসরিন দাবি করেছেন, এটি কোনো ধর্মীয় বিবাদ নয়, বরং পুরনো শত্রুতা মেটাতেই সুপরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়িয়ে দীপুকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, কারখানার ফ্লোর ম্যানেজার এবং স্থানীয় পুলিশের একাংশ জানতেন যে বাইরে ঘাতক বাহিনী অপেক্ষা করছে, তা সত্ত্বেও কেন দীপুকে তাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হলো?

স্থানীয় সূত্রের খবর, জনতা দীপুকে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে নগ্ন করে, গাছে বেঁধে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে। এই ঘটনায় র‍্যাব এ পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ২০২৪ সালে উৎসব মণ্ডলের ওপর চলা আক্রমণের প্রসঙ্গ টেনে তসলিমা নাসরিন অভিযোগ করেন যে, বাংলাদেশে উগ্রপন্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে অনেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন যে হিন্দুদের হত্যা করলেই ‘স্বর্গ’ লাভ হবে। তদন্ত জারি থাকলেও দীপুর এই মর্মান্তিক মৃত্যু বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে গভীর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।