“ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা!” নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ শিক্ষামন্ত্রীর, বিপাকে লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থী?

এসআইআর (SIR) বা ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়ার প্রশাসনিক জটিলতা ঘিরে রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের লড়াই এবার পৌঁছে গেল মাধ্যমিক পরীক্ষার দোরগোড়ায়। রাজ্য শিক্ষা দফতরকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিএলও (BLO) পদে নিয়োগের অভিযোগ তুলে কমিশনের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর দাবি, এটি ক্ষমতা কুক্ষিগত করার এক পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।

ব্রাত্য বসুর বিস্ফোরক অভিযোগ: শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু দাবি করেছেন, রাজ্য সরকার তথা শিক্ষা দফতরকে কোনওভাবেই অবহিত না করে শিক্ষকদের এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, “শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ওপর এভাবে হঠাৎ দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়ার ফলে স্বাভাবিক পঠনপাঠনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। এটি আসলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা।” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, অন্য রাজ্যে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের দিয়ে এই কাজ করানো হলেও পশ্চিমবঙ্গে স্থায়ী শিক্ষকদের নিশানা করা হচ্ছে।

মাধ্যমিক নিয়ে আশঙ্কা: সামনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলা এই পরীক্ষায় প্রায় এক লক্ষ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী পরিদর্শক বা ভেন্যু সুপারভাইজার হিসেবে নিযুক্ত থাকেন। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের ভোটের কাজে ব্যস্ত রাখলে পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে যেন ২ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষকদের কমিশন সংক্রান্ত কোনও কাজে বাধ্য না করা হয়।

সরকারের অবস্থান: ব্রাত্য বসু পর্ষদের এই পদক্ষেপকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের মতে, বিএলও নিয়োগের বিষয়টি আগে জানালে সময়সূচি সামলানো যেত, কিন্তু এখন শিক্ষক মহলে চরম বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। শিক্ষকদের ওপর অতিরিক্ত চাপ কমানো এবং পরীক্ষার্থীদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখাই সরকারের লক্ষ্য বলে সাফ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

রাজ্য ও কমিশনের এই ‘ইগোর লড়াই’ এখন মাধ্যমিকের মতো বড় পরীক্ষার ওপর ছায়া ফেলে কি না, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজ্যের ছাত্র ও অভিভাবক সমাজ।