জ্বলছে বাংলাদেশ! ওসমান হাদির মৃত্যুতে দেশজুড়ে চরম অরাজকতা, মহাসঙ্কটে ইউনুস সরকার

অশান্তির আগুনে দাউদাউ করে জ্বলছে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। জনপ্রিয় নেতা ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকেই গোটা দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে চরম অরাজকতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্যত ব্যর্থ মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। ঘরোয়া রাজনীতিতে এই অস্থিরতার মাঝেই আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সাধারণ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব কি না, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন।

রক্তাক্ত বাংলাদেশ ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা: ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকেই বিক্ষোভের রেশ ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশের প্রতিটি কোণায়। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চল— সর্বত্রই চলছে দাঙ্গা ও ভাঙচুর। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, উন্মত্ত জনতা সংবাদমাধ্যমের দফতরে হামলা চালাচ্ছে। এমনকি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষতিগ্রস্ত বাসভবনেও নতুন করে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এর পাশাপাশি দেশজুড়ে মাথাচাড়া দিয়েছে তীব্র ভারত-বিদ্বেষ, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক মহল।

ভোটের প্রস্তুতি বনাম আশঙ্কা: নির্বাচনের বাকি আর দু’মাসেরও কম সময়। কিন্তু পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার বদলে আরও ঘোরালো হচ্ছে। বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানালেও তলে তলে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলছে নিজেদের। রিটার্নিং অফিসার ও সরকারি রিটার্নিং অফিসারদের দফতরে কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ওপরও জোর দেওয়া হচ্ছে।

নিরাপত্তাহীনতায় প্রার্থীরা: ভোটের লড়াইয়ে নামার আগেই প্রাণভয়ে কাঁপছেন প্রার্থীরা। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই সম্ভাব্য দুই প্রার্থী তাঁদের চরম নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন। রাজপথে যে হারে হিংসা ছড়াচ্ছে, তাতে ভোটাররা বুথমুখী হবেন কি না, তা নিয়ে খোদ কমিশনের অন্দরেই তৈরি হয়েছে সংশয়।

ভারত-বিদ্বেষ ও অস্থিরতা: বিক্ষোভের আঁচ থেকে বাদ যাচ্ছে না সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানও। ‘ছায়ানট’-এর মতো জায়গায় ভাঙচুর এবং দেশজুড়ে ভারত-বিরোধী স্লোগান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য এই নির্বাচন এখন এক বিশাল অগ্নিপরীক্ষা। ১২ ফেব্রুয়ারি আদৌ কি শান্তিপূর্ণভাবে সাধারণ নির্বাচন সম্পন্ন হবে, নাকি এই অরাজকতা আরও বড় রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের রূপ নেবে— সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব।