ফের উত্তাল বাংলাদেশ! হিন্দু যুবককে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ, বাদ্যযন্ত্র ভেঙে ছারখার ‘ছায়ানট’

২০২৪-এর অগাস্টের সেই ভয়াবহ স্মৃতি ফের ফিরে এল বাংলাদেশে। একদিকে ময়মনসিংহে এক হিন্দু যুবককে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার নৃশংস অভিযোগ, অন্যদিকে শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ধানমণ্ডির বাড়ি ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ‘ছায়ানট’-এ কট্টরপন্থীদের তাণ্ডব—সব মিলিয়ে ওপার বাংলার পরিস্থিতি এখন চরম অগ্নিগর্ভ।

হিংসার দাবানল: বৃহস্পতিবার রাত থেকে নতুন করে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশে। এর নেপথ্যে রয়েছে কোটা আন্দোলনের পরিচিত মুখ এবং আওয়ামি লিগ নিষিদ্ধের দাবিতে সক্রিয় শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যু। গত শুক্রবার প্রচারে বেরিয়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবর আসতেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় রাজধানী ঢাকা-সহ বিভিন্ন এলাকা।

সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক নিশানায় ভারত: বাংলাদেশের প্রগতিশীল সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র ‘ছায়ানট’-এ হামলা চালিয়েছে উন্মত্ত জনতা। বাদ্যযন্ত্র, তবলা, হারমোনিয়াম ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সেখানে ‘ভারতীয় সংস্কৃতি’ বর্জনের স্লোগান তোলা হয়েছে। একই চিত্র ধরা পড়েছে চট্টগ্রামে ভারতীয় উপদূতাবাসেও, যেখানে দফায় দফায় ইট-পাটকেল ছোড়া হয় এবং ভারত-বিরোধী স্লোগান ওঠে।

তছনছ মুজিবের স্মৃতি: ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যেটুকু অবশিষ্ট ছিল, তাও ফের ভাঙচুর করা হয়েছে। রাজশাহীতেও তাঁর একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি আওয়ামি লিগের বিভিন্ন অফিসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং শেখ হাসিনার ছবিতেও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।

অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ: এই চরম অস্থিরতার মাঝে প্রধান উপদেষ্টা ড. মহম্মদ ইউনুস ওসমানের মৃত্যুকে ‘জাতীয় ক্ষতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার ঘোষণা করা হয়েছে এবং সরকার তাঁর পরিবার ও সন্তানের দায়িত্ব নেবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে এই ঘোষণা সত্ত্বেও রাজপথে বিক্ষোভ থামার কোনো লক্ষণ নেই।