দেড় হাজারি গ্রামে ৩ মাসে ২৭ হাজার শিশুর জন্ম! মহারাষ্ট্রের গ্রামকে ঘিরে ঘনীভূত রহস্য, এর পেছনে কি বড় কোনো চক্র?

পাটিগণিতের হিসেবে ১+১ সমান ২ হয়। কিন্তু মহারাষ্ট্রের যবতমাল জেলার শেন্দুরসানি গ্রাম পঞ্চায়েতে সেই হিসেব এক ধাক্কায় বদলে গেল। সাকুল্যে দেড় হাজার মানুষের বাস যে গ্রামে, সেখানে গত তিন মাসে ২৭ হাজার শিশুর জন্মের নথি পাওয়া গিয়েছে! অবিশ্বাস্য মনে হলেও সরকারি সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমে (CRS) এমনটাই তথ্য উঠে এসেছে।

অসম্ভব কাণ্ড ও বাংলার যোগ সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে এই বিপুল সংখ্যক শিশুর জন্ম নথিভুক্ত করা হয়েছে। আরও আশ্চর্যের বিষয় হল, মহারাষ্ট্রের এই গ্রাম পঞ্চায়েতের তালিকায় থাকা অধিকাংশ শিশুর নাম ও ঠিকানা পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তরপ্রদেশের। বাস্তবে যেখানে জনবসতি নামমাত্র, সেখানে কয়েক হাজার শিশুর জন্ম হওয়া যে অসম্ভব, তা বুঝতে সময় লাগেনি প্রশাসনের।

সাইবার ক্রাইমের ‘মাস্টারপ্ল্যান’? প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এটি কোনো অলৌকিক ঘটনা নয়, বরং এক ভয়াবহ সাইবার জালিয়াতি। মুম্বইতে বসে হ্যাকাররা বা সাইবার অপরাধীরা কোনোভাবে সরকারি পোর্টালে অনুপ্রবেশ করে এই বিপুল পরিমাণ তথ্য আপলোড করেছে। কেন এই জালিয়াতি? বিশেষজ্ঞদের ধারণা:

ভুয়ো পরিচয়পত্র: এই জন্ম শংসাপত্র ব্যবহার করে আধার কার্ড বা পাসপোর্ট তৈরির ছক থাকতে পারে।

সরকারি সুবিধা: কোনো বিশেষ কেন্দ্রীয় বা রাজ্য প্রকল্পের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনাও অসম্ভব নয়।

তদন্তে নামল পুলিশ ও বিজেপি এই খবর ছড়াতেই এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিজেপি নেতা কীর্তি সোমাইয়া ওই গ্রামে সশরীরে হাজির হন। পুরো বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে তিনি বলেন, “এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্র। আমি মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডের কাছে আবেদন করব যাতে এই ২৭ হাজার ভুয়ো নথি অবিলম্বে বাতিল করা হয়।”

ইতিমধ্যেই মুম্বই ও যবতমাল পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। সরকারি পোর্টালে এমন ডিজিটাল কারচুপি কীভাবে সম্ভব হল, তা খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।