‘দৃশ্যম’-এর সেই ছোট্ট অনু আজ বিশ্বজয়ী! লণ্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে ডিগ্রি, বাবার স্বপ্নপূরণের রূপকথা শোনালেন এসথার

২০১৩ সালের ব্লকবাস্টার ছবি ‘দৃশ্যম’-এর সেই ছোট্ট মেয়েটিকে মনে আছে? মোহনলালের কনিষ্ঠ কন্যা ‘অনু’, যার বুদ্ধিদীপ্ত অভিনয় দর্শকদের চমকে দিয়েছিল। সেই ছোট্ট এসথার অনিল আজ আর কেবল সেলুলয়েডের শিশুশিল্পী নন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি যে মেধার পরিচয় দিলেন, তা হার মানাবে সিনেমার চিত্রনাট্যকেও। বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স (LSE) থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নে (International Development) স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করলেন এসথার।
অবাস্তব স্বপ্ন ও বাবার জেদ ইনস্টাগ্রামে গ্র্যাজুয়েশন গাউন পরা ছবি শেয়ার করে আবেগঘন এক বার্তা দিয়েছেন এসথার। তিনি জানান, এলএসই-তে পড়ার স্বপ্ন দেখা তাঁর কাছে ছিল ‘অবাস্তব’। বাবার এক পরিচিতকে এলএসই-তে পড়তে দেখে তাঁর বাবা উৎসাহ দিয়েছিলেন এসথারকেও। তখন নিজের যোগ্যতা নিয়ে সন্দিহান থাকলেও, বাবার বিশ্বাস আজ তাঁকে লণ্ডনের রাজপথে সেরার সেরা ডিগ্রির সামনে দাঁড় করিয়ে দিল।
আর্থিক অনটন ও বাবা-মায়ের ত্যাগ সাফল্যের এই পথ সহজ ছিল না। এসথার জানিয়েছেন, যখন তিনি অফার লেটার পান, তখন বাড়িতে জানাতে ভয় পাচ্ছিলেন। কারণ জানতেন, এলএসই-র বিশাল খরচ মেটানো তাঁর পরিবারের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। ভাইদের স্টুডেন্ট লোনের বোঝা তখন তুঙ্গে। কিন্তু তাঁর বাবা-মা এক কথায় বলেছিলেন, “টাকা আসবে, তুমি যাচ্ছ।” কোনো জাঁকজমক নয়, বরং মধ্যবিত্ত বাবা-মায়ের নিঃশব্দ ত্যাগ ও অটুট ভরসাই ছিল এসথারের সাফল্যের চাবিকাঠি।
ইমপোস্টার সিনড্রোম ও নতুন এসথার লণ্ডনে গিয়েও লড়াই শেষ হয়নি। বিশ্বের মেধাবী ছাত্রদের মাঝে নিজেকে বারবার ‘অযোগ্য’ মনে হত তাঁর। কিন্তু সেই ভয়কে জয় করেই তিনি আজ একজন আত্মবিশ্বাসী তরুণী। নারী ও ক্ষমতার সম্পর্ক (Women and Power) নিয়ে পড়াশোনা করে তিনি এখন নিজেকে গড়ে তুলছেন এক শক্তিশালী নারী হিসেবে।
এসথারের এই সাফল্যে নাজরিয়া নাজিম থেকে শুরু করে মালয়ালম ও তামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বহু তারকা তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পর্দার ‘অনু’ আজ বাস্তবের দুনিয়ায় এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।