রক্তাক্ত বাংলাদেশ! খবরের কাগজের অফিসে দাউদাউ আগুন, ভেতরে প্রাণভিক্ষা সাংবাদিকদের, নিভে গেল আন্দোলনের ‘অগ্নিপুরুষ’ হাদি

অশান্তির দাবানলে জ্বলছে ওপার বাংলা। গত শুক্রবার ঢাকার জনবহুল বিজয়নগরে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই অস্থিরতা শুরু হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং আগস্ট বিপ্লবের অন্যতম মুখ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর পৌঁছাতেই সেই আগুন এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। ঢাকা-সহ বাংলাদেশের একাধিক বড় শহরে রাতভর তাণ্ডব চালিয়েছে হাদি-পন্থীরা।
সংবাদপত্রের অফিসে অগ্নিকাণ্ড: প্রাণ বাঁচানোর আর্তি সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ঢাকার কারওয়ান বাজার এলাকায়। বিক্ষোভকারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলাদেশের প্রথম সারির একাধিক সংবাদপত্রের অফিসে হামলা চালায়। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে অফিসের তলাগুলো। আগুনের লেলিহান শিখার মাঝে আটকে পড়েন বহু সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী। ভেতর থেকে তাঁদের ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার শুনে শিউরে ওঠেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। অভিযোগ, আন্দোলনের সঠিক খবর পরিবেশন না করার রোষেই এই আক্রমণ।
রাতভর তাণ্ডব ও ধ্বংসলীলা আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম পরিচিত মুখ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে শোকের ছায়া যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে চরম উত্তেজনা। হাদি-পন্থীরা রাস্তায় নেমে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও পাথর বৃষ্টি শুরু করেছে। আওয়ামী লিগের কার্যালয় থেকে শুরু করে সরকারি সম্পত্তিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী।
ভোটের মুখে অশনি সংকেত আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। ঠিক তার আগে এমন একজন প্রভাবশালী ছাত্র নেতার মৃত্যু এবং দেশব্যাপী এই হিংসা নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই আগুন নেভার লক্ষণ নেই, বরং দিন যত এগোবে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শরিফ ওসমান হাদি আজ কেবল এক নাম নন, তাঁর মৃত্যু যেন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের এক অগ্নিপরীক্ষার সামনে দাঁড় করিয়ে দিল অন্তর্বর্তী সরকারকে।