‘চপ বেচব না কি নিয়োগ পাব?’ মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পাল্টা জবাব দিতে শহরের রাস্তায় হবু শিক্ষকরা, উত্তাল সল্টলেক

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চা-ঘুগনি’ বিক্রির পরামর্শের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার সেই বার্তাকে হাতিয়ার করে রাজপথে নামলেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) চাকরিপ্রার্থীরা। হাতে আলুর চপের ঠোঙা আর কাঁধে চায়ের কেটলি নিয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতার রাস্তায় শিক্ষক পদপ্রার্থীদের এই প্রতিবাদী মিছিল এক অন্য মাত্রা যোগ করল।
কী ঘটেছিল বুধবার? ব্যবসায়ীদের একটি সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বেকারত্বের বিকল্প পথ হিসেবে চা, চপ ও ঘুগনি বিক্রির নিদান দিয়েছিলেন। ছোট ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হওয়ার সেই বার্তাই যেন বুমেরাং হয়ে আছড়ে পড়ল পরদিন। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, শিক্ষিত যুবসমাজকে নিয়োগ না দিয়ে এ ধরণের পরামর্শ আসলে তাঁদের যোগ্যতাকে অপমান করার সামিল।
বিকাশ ভবনের সামনে দুই মিছিল: বৃহস্পতিবার সল্টলেকের রাজপথ ছিল রীতিমতো উত্তপ্ত। মূলত দু’টি পৃথক মিছিল শহরবাসীর নজর কেড়েছে:
প্রথম মিছিল: সল্টলেক করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত মিছিল করেন দৃষ্টিহীন ও শারীরিক প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীরা। প্রশাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা।
দ্বিতীয় মিছিল: সাধারণ চাকরিপ্রার্থীরা কাঁধে চায়ের কেটলি ও হাতে আলুর চপের ঠোঙা নিয়ে মিছিলে হাঁটেন। তাঁদের সাফ কথা, “আমরা শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা রাখি, আমাদের হাতে ডাস্টার-চক থাকার কথা, কিন্তু সরকার আমাদের হাতে চপ-মুড়ির ঠোঙা তুলে দিচ্ছে।”
অভিনব প্রতিবাদে বিদ্রূপের সুর: রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা পথচারীদের অনেককেই এদিন চাকরিপ্রার্থীদের হাত থেকে প্রতিকী হিসেবে চপ-মুড়ি নিতে দেখা যায়। বিরোধীদের দাবি, কর্মসংস্থান দিতে ব্যর্থ সরকার যখন ঘুগনি বিক্রির স্বপ্ন দেখায়, তখন শিক্ষিত যুবসমাজের কাছে প্রতিবাদ ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকে না।
সব মিলিয়ে, মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাজপথে চাকরিপ্রার্থীদের এই ‘চপ-মুড়ি’ আন্দোলন রাজ্যের শাসকদলের জন্য নতুন অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।