ওসমানের পরিবার এখন রাষ্ট্রের দায়িত্বে! শনিবার দেশজুড়ে রাষ্ট্রীয় শোকের ডাক ইউনূসের, ওপার বাংলায় কি এবার গৃহযুদ্ধের মেঘ?

৬ দিনের লড়াই শেষ। ১৮ ডিসেম্বর রাতে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান হাদি। আর এই মৃত্যুর খবর আসতেই পুনরায় অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম—সর্বত্রই শুরু হয়েছে প্রবল বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাস্তায় নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী। এমন এক চরম উত্তেজনাকর মুহূর্তে রাত সোয়া ১১টায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক, ওসমানের পরিবারের দায়িত্ব নিচ্ছে সরকার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস অত্যন্ত ভারাক্রান্ত কণ্ঠে ওসমান হাদিকে ‘শহিদ’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি ঘোষণা করেন:
রাষ্ট্রীয় শোক: আগামী শনিবার বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে। সেদিন সরকারি-বেসরকারি সমস্ত প্রতিষ্ঠানে এবং বিদেশের হাই কমিশনগুলিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
বিশেষ প্রার্থনা: শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর দেশের প্রতিটি মসজিদে এবং অন্যান্য ধর্মস্থানে হাদির আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
পরিবারের দায়িত্ব: হাদির অকাল প্রয়াণে তাঁর স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের সারাজীবনের দায়িত্ব নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।
আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে নীরবতা ও ধৈর্যের আবেদন হাদির প্রয়াণের খবর মিলতেই উন্মত্ত জনতা ঢাকার কারওয়ান বাজারে ‘প্রথম আলো’ এবং ‘দ্য ডেইলি স্টার’ সংবাদপত্রের অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এমনকি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতেও নতুন করে হামলার চেষ্টা করা হয়। দেশের এই ভেঙে পড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ভাষণে সুনির্দিষ্ট কোনো সমাধানের কথা না বললেও, ড. ইউনূস দেশবাসীকে ধৈর্য ধরার এবং সংযত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।
নেপথ্যে কী এই ক্ষোভ? আওয়ামি লিগ ও ভারত-বিরোধী বক্তব্যের জন্য সাম্প্রতিক সময়ে ইনকিলাব মঞ্চের এই নেতা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারের সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। হাদি সমর্থকদের অভিযোগ, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে গভীর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে। হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই গণরোষ এখন অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য এক বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে।