ভোটের আগে রণক্ষেত্র ওপার বাংলা! ইনকিলাব মঞ্চের নেতার মৃত্যু ঘিরে কেন ভারতের দিকে তোপ? মুখ খুলল বিদেশ মন্ত্রক

নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই অশান্তির কালো মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে বাংলাদেশে। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নতুন করে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে। একদিকে চট্টগ্রামে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে মধ্যরাতে বিক্ষোভ, অন্যদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তোলা অভিযোগকে সরাসরি নস্যাৎ করে দিয়ে কড়া বিবৃতি জারি করল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
ভারতের কঠোর অবস্থান: হাদি হত্যাকাণ্ডের পেছনে কোনোভাবে ভারতের নাম জড়ানোর যে দাবি করা হয়েছিল, তা স্পষ্ট ভাষায় প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে:
ভারত কখনোই নিজের ভূখণ্ডকে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজে ব্যবহারের অনুমতি দেয় না।
বাংলাদেশ সরকারের দাবি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর।
প্রতিবেশী দেশে অবিলম্বে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছে দিল্লি।
মধ্যরাতে উত্তপ্ত চট্টগ্রাম: বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে চট্টগ্রামের ভারতীয় অ্যাসিস্ট্যান্ট হাইকমিশনের বাইরে অবস্থানে বসেন একদল বিক্ষোভকারী। মুহুর্মুহু ভারত-বিরোধী এবং আওয়ামি লিগ বিরোধী স্লোগানে প্রকম্পিত হয় এলাকা। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে হাদিকে ‘ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী সংগ্রামের শহিদ’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
যেভাবে মৃত্যু হল হাদির: গত শুক্রবার বিজয়নগরে নির্বাচনী প্রচার সেরে রিকশা করে বাড়ি ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। বাইকে আসা দুষ্কৃতীরা তাঁর মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল ও পরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
ভোটের আগে ষড়যন্ত্রের খেলা? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে নির্বাচন। তার আগে এমন প্রভাবশালী নেতার মৃত্যু এবং ভারতের দিকে আঙুল তোলা—সবটাই নির্বাচনের আগে অশান্তির বাতাবরণ টিকিয়ে রাখার সুপরিকল্পিত ছক হতে পারে। ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব পুরোপুরি সে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের।