পাহাড়ে আছড়ে পড়ল ‘নিয়োগ দুর্নীতি’র আগুন! স্কুল বন্ধ করে রাজপথে ৩১৩ শিক্ষক, বিপাকে অনিত-মমতা?

সমতলের পর এবার নিয়োগ দুর্নীতির কালো মেঘ পাহাড়ে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ৩১৩ জন শিক্ষকের চাকরি যেতেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নজিরবিহীন বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল দার্জিলিং। এদিন পাহাড়ের সমস্ত স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ রেখে প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হলেন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
ঘুম থেকে গোর্খা ভবন— মিছিলে মিছিলে অবরুদ্ধ পাহাড়: এদিন সকালে ঘুম রেল স্টেশন থেকে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। গোটা পাহাড় পরিক্রমা করে দার্জিলিং স্টেশনের সামনে পথসভা করেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেয় মাধ্যমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতিও। বিক্ষুব্ধ শিক্ষকদের সাফ দাবি— “যদি আমাদের নিয়োগ বেআইনি হয়, তবে গত কয়েক বছরে আমাদের নেওয়া পরীক্ষা, রেজাল্ট আর সরকারি কাজগুলোকেও বাতিল করা হোক। সসম্মানে নিয়োগ না দিলে পাহাড় স্তব্ধ করে দেওয়া হবে।”
বিপাকে শাসকদল, সরব বিরোধীরা: বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে এই রায় অস্বস্তিতে ফেলেছে অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা এবং রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে। যদিও অনিত থাপা চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়িয়ে আইনি লড়াইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু আক্রমণ ছাড়ছে না বিজেপি। শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, “তৃণমূল মানেই দুর্নীতি। অনিত থাপা আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কারণেই আজ পাহাড়ের মেধাবীরা রাস্তায়। এর দায় তাঁদেরই নিতে হবে।”
কেন এই চাকরি বাতিল? বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর সিঙ্গল বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, জিটিএ (GTA) এলাকায় এই নিয়োগ প্রক্রিয়া ছিল সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আইনবিরুদ্ধ। ১৯৯৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত এই ৭০০-র বেশি শিক্ষকের মধ্যে ৩১৩ জনের নিয়োগে চরম অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে আদালত।
আগামী দিনে কী? পাহাড়ের স্কুলগুলোতে তালা ঝোলায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীরা। অন্যদিকে, গোর্খা ভবনে পরবর্তী রণকৌশল নির্ধারণে বৈঠকে বসেছেন শিক্ষক সংগঠনগুলি। পাহাড়ের এই ক্ষোভ কি আসন্ন নির্বাচনে ব্যালট বক্সে প্রভাব ফেলবে? নজর রাখছে রাজনৈতিক মহল।