ভারত কি সত্যিই ‘সুপারপাওয়ার’? রঘুরাম রাজনের বিস্ফোরক মন্তব্যে তোলপাড় দেশ, দিলেন ৩০ বছরের ডেডলাইন

ভারত কি সত্যি বিশ্বশক্তির তালিকায় শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছে? নাকি আমরা কেবল প্রচারের চাকচিক্যে একটি সোনালী স্বপ্নে বিভোর? সম্প্রতি একটি পডকাস্টে অংশ নিয়ে ভারতের অর্থনীতি ও ভবিষ্যৎ নিয়ে এক বিরাট সতর্কবার্তা দিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন (Raghuram Rajan)। তাঁর সাফ কথা, ভারত এখনও ‘সুপারপাওয়ার’ নয় এবং এই তকমা পেতে আমাদের আরও অন্তত ৩০ বছরের কঠোর পরিশ্রম বা ‘হোমওয়ার্ক’ করতে হবে।
জিডিপির আড়ালে লুকিয়ে থাকা সত্য
দেশের জিডিপি (GDP) বৃদ্ধি নিয়ে যখন চারদিকে জয়জয়কার, তখন রাজনের বিশ্লেষণ কিছুটা ভিন্ন সুর দিচ্ছে। তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন ‘জিডিপি ডিফ্লেটর’ (GDP Deflator)-এর কথা। রাজনের মতে, বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা কম থাকায় ভারতের আসল বৃদ্ধির হার যতটা হওয়া উচিত, তার চেয়ে কিছুটা বেশি দেখাচ্ছে। তাই কেবল পরিসংখ্যান দেখে আত্মতুষ্টিতে ভোগার অবকাশ নেই।
সুপারপাওয়ার হতে গেলে কী করতে হবে?
রঘুরাম রাজনের মতে, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ শক্তিতে রূপান্তরিত হওয়ার কোনো সহজ ‘জাদুমন্ত্র’ নেই। এর জন্য দরকার সমাজের সর্বস্তরের মানুষের নিরলস অংশগ্রহণ:
নাগরিক দায়িত্ব: দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সেনাবাহিনী—সবাইকেই দেশ গড়ায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
পেশাদারদের ভূমিকা: ডাক্তার, অধ্যাপক এবং প্রযুক্তিবিদদের কোনো ফাঁকি না দিয়ে আগামী তিন দশক নিরবচ্ছিন্ন কাজ করে যেতে হবে।
মানোন্নয়ন: কেবল পরিকাঠামো নয়, শিক্ষার গুণগত মান ও কর্মসংস্থানের ওপর সবথেকে বেশি জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
উন্নয়নশীল থেকে উন্নত: কঠিন পথ চলা
রাজন স্বীকার করেছেন যে, বিশ্বের বড় বড় দেশগুলোর তুলনায় ভারত অনেক দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ভারত এখনও ‘উন্নয়নশীল’ দেশের তকমা ঝেড়ে ফেলতে পারেনি। তাঁর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, আগামী ৩০ বছর ভারত কীভাবে নিজের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো সামলায় এবং শ্রমশক্তিকে ব্যবহার করে, তার ওপরই নির্ভর করবে ভারতের আসল ভবিষ্যৎ।