চিরনিদ্রায় ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’র স্রষ্টা রাম সুতার! ১০০ বছরে থামল কালজয়ী ভাস্করের সৃষ্টিমুখর সফর

ভারতীয় ভাস্কর্যের জগতে এক বিশাল নক্ষত্রপতন। বুধবার রাতে নয়ডার বাসভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন বিশ্ববন্দিত ভাস্কর রাম ভানজি সুতার (Ram Sutar)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। শতায়ু পূর্ণ করার পরেই ভারতের এই কালজয়ী শিল্পী চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শিল্পকলা ও স্থাপত্য জগতে।

বিশ্বের উচ্চতম মূর্তির স্থপতি
রাম সুতারের নামের সঙ্গে অমর হয়ে থাকবে গুজরাটের নর্মদা নদীর তীরে দণ্ডায়মান সরদার বল্লভভাই প্যাটেলের ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’। বিশ্বের সর্বোচ্চ এই মূর্তির নকশা ও পরিকল্পনা করে তিনি ভারতকে পৌঁছে দিয়েছিলেন বিশ্বমঞ্চের শীর্ষে। ১৮২ মিটার উচ্চতার এই স্থাপত্য শুধুমাত্র ঐতিহাসিক এক মাইলফলক নয়, বরং এটি তাঁর অসাধারণ কল্পনাশক্তি ও শৈল্পিক দক্ষতার এক মহাকাব্যিক নিদর্শন।

সংসদ ভবনের আঙিনায় তাঁর অক্ষয় স্বাক্ষর
শুধু ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ নয়, ভারতীয় গণতন্ত্রের পীঠস্থান সংসদ ভবনের বাইরে ধ্যানমগ্ন মহাত্মা গান্ধীর যে বিশাল মূর্তিটি আমরা দেখি, তার রূপকারও ছিলেন রাম সুতার। এছাড়াও সংসদের চত্বরে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের অশ্বারোহী মূর্তিটির নকশাও তাঁরই হাতে করা। গত কয়েক দশক ধরে ভারতের জাতীয় বীরদের মূর্তিতে প্রাণ সঞ্চার করে গিয়েছেন এই প্রবাদপ্রতিম শিল্পী।

এক অনুপ্রেরণার নাম রাম সুতার
রাম সুতার কেবল একজন শিল্পী ছিলেন না, তিনি ছিলেন ইতিহাসের এক সার্থক ভাষ্যকার। তাঁর প্রতিটি সৃষ্টির মধ্যে ফুটে উঠেছে দেশপ্রেম, সাহস ও ঐতিহ্যের মিশেল। নয়ডার বাসভবনে তাঁর প্রয়াণের খবরে দেশ-বিদেশের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে প্রতিটি নবীন ভাস্কর ও শিল্পীর কাছে এক আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন।

উপসংহার
যুগের অবসান হলেও রাম সুতারের নাম মুছে যাবে না। ভারতের মাটি ও পাথরের প্রতিটি কোণে তাঁর খোদাই করা মূর্তিগুলো ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রেরণা জুগিয়ে যাবে। ভারত হারিয়েছে তার এক ‘রত্ন’-কে, কিন্তু তাঁর সৃষ্টি অমর হয়ে বিরাজ করবে মহাকালে।