AFC-র চরম শাস্তির মুখে মোহনবাগান, ২০২৮ পর্যন্ত বন্ধ বিদেশের দরজাও?

ভারতীয় ফুটবল তথা মোহনবাগান সমর্থকদের জন্য বছরের শেষে এল দুঃসংবাদ। ইরানে ম্যাচ খেলতে না যাওয়ার খেসারত দিতে হচ্ছে শতাব্দী প্রাচীন এই ক্লাবকে। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (AFC) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল— আগামী দুই মরসুমের জন্য এশিয়ায় নির্বাসিত করা হলো মোহনবাগান সুপার জায়েন্টকে।

AFC-র কঠোরতম সিদ্ধান্ত: গত ১৭ ডিসেম্বর এএফসি-র শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি এক বৈঠকে জানায়, ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ মরসুম পর্যন্ত এএফসি-র কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে না সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। অর্থাৎ ২০২৭-২৮ মরসুমের আগে বিদেশের মাটিতে বল পায়ে নামার সুযোগ হারাচ্ছে তারা। এর পাশাপাশি প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা (৫০ হাজার মার্কিন ডলার) জরিমানাও করা হয়েছে ক্লাবকে।

কেন এই শাস্তি? চলতি মরসুমে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এর ম্যাচ খেলতে ইরানের সেপাহান এফসি-র বিরুদ্ধে নামার কথা ছিল মোহনবাগানের। কিন্তু তৎকালীন পরিস্থিতিতে ইরানের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফুটবলাররা সেখানে যেতে অস্বীকার করেন। বিশেষ করে দলের অস্ট্রেলীয় ফুটবলারদের ভিসা সমস্যা এবং শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার ভয়ে বাগান কর্তৃপক্ষ ম্যাচটি ‘ওয়াকওভার’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই অসহযোগিতার জেরেই এবার নেমে এল শাস্তির খাঁড়া।

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি: মোহনবাগানের ইতিহাসে এএফসি-র নির্বাসন এই প্রথম নয়। এর আগেও দু’বার শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে তাদের:

  • ১৯৯৯ সাল: জাপানের জুবিলো ইওয়াতা-র বিরুদ্ধে ম্যাচ ছেড়ে দেওয়ায় ৩ বছরের জন্য নির্বাসিত হয়েছিল ক্লাব।

  • ২০২৪ সাল: নিরাপত্তার কারণে ট্র্যাক্টর এসসি-র বিরুদ্ধে খেলতে না যাওয়ায় প্রতিযোগিতা থেকে বাতিল হতে হয়েছিল।

  • ২০২৫ সাল: এবার সেপাহান এফসির বিরুদ্ধে না খেলায় দুই বছরের বড় শাস্তি এবং মোটা টাকা জরিমানা।

শাস্তির আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল, কিন্তু AFC-র এই সরকারি সিলমোহর মোহনবাগান ম্যানেজমেন্টের ওপর যে বড় চাপ তৈরি করল, তা বলাই বাহুল্য। ২০২৮ সালের আগে কি ফের এশিয়ায় ফিরতে পারবে গঙ্গার ওপারের ক্লাব? এখন সেটাই দেখার।