নিউটাউনের আগুনে ‘ষড়যন্ত্রের’ গন্ধ? ভোটার তালিকায় নাম ঢোকাতে পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড! বিস্ফোরক দাবি অমিত মালব্যের

বুধবার সন্ধ্যায় নিউটাউনের ইকো পার্ক সংলগ্ন ঘুনি বস্তিতে লাগা বিধ্বংসী আগুন এখন নিছকই দুর্ঘটনা নয়, বরং এক গভীর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের তকমা পেল। শীতের রাতে কয়েকশো মানুষের মাথার ছাদ কেড়ে নেওয়া এই অগ্নিকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেস ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় তুললেন বিজেপির আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য।

বিস্ফোরক অভিযোগ অমিত মালব্যের
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি দীর্ঘ পোস্টে অমিত মালব্য দাবি করেছেন, এই অগ্নিকাণ্ড কোনও দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত। তাঁর যুক্তির সপক্ষে তিনি যে কারণগুলো তুলে ধরেছেন:

অনুপ্রবেশকারী ইস্যু: নির্বাচন কমিশন যখন অবৈধ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নোটিশ জারির প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে, ঠিক তার আগেই এই অগ্নিকাণ্ড অত্যন্ত রহস্যজনক।

ভোটার তালিকায় কারচুপি: মালব্যের দাবি, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর ওই এলাকা থেকে বহু অনুপ্রবেশকারীর নাম বাদ গিয়েছে। আগুন লাগিয়ে সেই নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলার নাটক সাজানো হয়েছে যাতে পরবর্তীকালে ‘নথি হারিয়েছে’ এই দাবিতে নতুন পরিচয়পত্র তৈরি করা যায়।

ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি: তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁর সরাসরি তোপ, “ভোটার তালিকায় নাম ফেরাতেই এই আগুন নিয়ে খেলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”

তৃণমূলের পাল্টা জবাব
বিজেপি নেতার এই বিতর্কিত দাবির পাল্টায় সরব হয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের প্রশ্ন, “বিপর্যয়ের এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে অমিত মালব্য কেন অনুপ্রবেশকারী তত্ত্ব নিয়ে নাক গলাচ্ছেন?” একইসঙ্গে তৃণমূলের কটাক্ষ, বিজেপি কি তবে নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা হারিয়েছে যে সব কিছুতেই ষড়যন্ত্র খুঁজে পাচ্ছে?

সর্বস্বান্ত কয়েকশো মানুষ, হাহাকার ঘুনি বস্তিতে
রাজনৈতিক বাদানুবাদ যখন তুঙ্গে, তখন ঘুনি বস্তির বাস্তব চিত্রটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। ভ্যান চালক, পরিচারিকা বা কাগজ কুড়োনি—দিন আনা দিন খাওয়া কয়েকশো মানুষের তিল তিল করে গড়ে তোলা ঝুপড়ি এখন কেবলই ছাইয়ের স্তূপ। বাসিন্দারা চোখের জলে জানিয়েছেন, ঘরবাড়ির সঙ্গেই পুড়ে গিয়েছে তাঁদের জমানো সামান্য টাকা এবং যাবতীয় পরিচয়পত্র। শীতের হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর মধ্যে এখন শুধুই হাহাকার।

তবে স্থানীয়দের একাংশও স্বীকার করেছেন যে, ওই বস্তিতে বসবাসকারীদের মধ্যে অনেকেই বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষ ছিলেন। ফলে আগুনের কারণ যান্ত্রিক গোলযোগ না কি এর পিছনে সত্যিই কোনও কূটনৈতিক ‘চাল’ রয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন।