কাঁকুড়গাছিতে হাড়হিম করা অগ্নিকাণ্ড! ২০ ইঞ্জিনের লড়াইয়েও ছাই বহু মানুষের স্বপ্ন, প্রাণ হাতে পথে পরিবার

শীতের রাত যে এভাবে দুঃস্বপ্ন হয়ে আসবে, তা ভাবতেও পারেননি কাঁকুড়গাছির বাসিন্দারা। বুধবার রাত তখন প্রায় দুটো। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন এলাকা। হঠাৎই বিকট শব্দ আর আগুনের লেলিহান শিখা! কাঁকুড়গাছির একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে মুহূর্তের মধ্যে ছাই হয়ে গেল একাধিক মানুষের ঘর ও জমানো পুঁজি।
“সব শেষ, শুধু প্রাণটুকু বেঁচে আছে”
আগুনের গ্রাস থেকে কোনওরকমে বেরিয়ে আসা এক বাসিন্দা কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “শীতের রাতে এক কাপড়ে বেরিয়ে আসতে হয়েছে। সব নথি পুড়ে ছাই। তিল তিল করে টাকা জমিয়ে ঘরের জিনিস কিনেছিলাম, আর বোধহয় কোনওদিন পারব না।” পরিবারের ৫ সদস্যকে নিয়ে কোনওমতে জ্বলন্ত ঘর থেকে বেরোতে পেরেছেন তিনি। অন্য এক বৃদ্ধা জানান, অসুস্থ শরীরে শুধু ওষুধটুকু হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন, বাকি সব এখন ধ্বংসস্তূপ।
রণক্ষেত্র কাঁকুড়গাছি: ২০ ইঞ্জিনের লড়াই
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের ২০টি ইঞ্জিন। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় আগুন নেভাতে বেশ বেগ পেতে হয় কর্মীদের। দমকলের প্রাথমিক অনুমান, অক্সিজেন সিলিন্ডার গোডাউন থেকেই আগুনের সূত্রপাত। অক্সিজেন থাকার কারণে আগুন দ্রুত পার্শ্ববর্তী গোডাউনগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘক্ষণের প্রচেষ্টায় বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও চলছে ‘কুলিং প্রসেস’। এখনও ৬টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে। বড়সড় ক্ষয়ক্ষতি হলেও স্বস্তির খবর এই যে, কোনও প্রাণহানি ঘটেনি।
নিউ টাউনেও আগুনের তাণ্ডব
কাঁকুড়গাছির রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার রাতে আগুন লাগে নিউ টাউনের ইকো পার্কের কাছে ঘুনি বস্তিতে। সেখানেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয় দমকলের ১২টি ইঞ্জিনকে। ঘিঞ্জি রাস্তা হওয়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সমস্যা তৈরি হয়। একের পর এক অগ্নিকাণ্ডে আতঙ্কিত শহরবাসী।
তদন্তে দমকল
কীভাবে এই ভয়াবহ আগুন লাগল, তা খতিয়ে দেখছে দমকল ও পুলিশ। শর্ট সার্কিট নাকি অন্য কোনও গাফিলতি ছিল, তা তদন্তের পরেই স্পষ্ট হবে। তবে যারা সব হারালেন, হাড়কাঁপানো শীতে তাঁদের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চয়তার মুখে।