‘বন্ধ হোক ভিআইপি সংস্কৃতি!’ যুবভারতী কাণ্ডে মমতাকে কড়া বার্তা রাজ্যপালের, চাইলেন ১০০০ সংরক্ষিত আসন

যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে লিওনেল মেসির উপস্থিতিতে যে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা ও তাণ্ডব ঘটেছে, তা নিয়ে এবার সরাসরি রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রে খবর, এই বিপর্যয়ের মূলে রয়েছে রাজ্যের ‘ভিআইপি সংস্কৃতি’। সাধারণ মানুষের ক্ষোভের আঁচ পেয়ে এবার এই সংস্কৃতি বন্ধ করার জন্য কড়া বার্তা দিয়েছেন তিনি।

ভিআইপি সংস্কৃতির পরিবর্তে ‘মানবিক পাস’ রাজ্যপাল মনে করেন, স্টেডিয়ামের আসনগুলি প্রভাবশালীদের পরিবার বা রাজনৈতিক নেতাদের জন্য অপচয় না করে সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য বরাদ্দ করা উচিত। তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন:

রাজ্যের প্রতিটি স্টেডিয়ামে অন্তত ১০০০টি আসন অনাথ শিশু, প্রবীণ, অসুস্থ এবং দরিদ্রদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে হবে।

ভিআইপি পাসের বদলে এই শ্রেণির মানুষের জন্য বিশেষ ‘মানবিক পাস’ চালু করতে হবে।

রাজভবনের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ লোকভবনের এক পদাধিকারীর দাবি, ১৩ ডিসেম্বরের সেই বিশৃঙ্খলার সময় দেখা গিয়েছে—জনপ্রতিনিধি, অসংবেদনশীল ভিআইপি এবং তাঁদের পরিজনরা মাঠে ভিড় জমিয়েছিলেন। এমনকি পুলিশের স্বাক্ষর বা ক্রীড়া দফতরের সিল দেওয়া ‘ক্লোজ প্রক্সিমিটি পাস’ নিয়ে বহু মানুষ মাঠে নেমে পড়েন। ফলে:

সাধারণ দর্শকরা প্রিয় তারকাকে এক ঝলক দেখার সুযোগ হারান।

সেলফি ও অটোগ্রাফের জন্য ভিআইপিদের উন্মত্ত হুড়োহুড়িতে খোদ মেসিও বিস্মিত হয়ে পড়েন।

দৃশ্যমানতা পুরোপুরি নষ্ট হয় এবং সম্পূর্ণ সময়সূচি ভেঙে পড়ে।

কেন টিকিট সাধারণের নাগালের বাইরে? রাজ্যপাল আরও প্রশ্ন তুলেছেন টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে। কেন একজন বেসরকারি ব্যক্তি এই সফর থেকে আর্থিক লাভ করবেন এবং সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হবেন, সে বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে লিখিত জবাব চেয়েছেন তিনি। রাজ্যপালের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ আধিকারিকের বক্তব্য, “জনগণের নায়ক জনগণকেই ভালোবাসেন, অসংবেদনশীল ভিআইপিদের ভিড় নয়।”

ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পদত্যাগ এবং পুলিশের সিট (SIT) গঠনের মাঝেই রাজ্যপালের এই ‘ভিআইপি সংস্কৃতি’ বিরোধী অবস্থান নবান্নের ওপর চাপ আরও বাড়িয়ে দিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।